আন্তর্জাতিক উত্তেজনা বাড়িয়ে ফের পাকিস্তানের উদ্দেশে আগ্রাসী হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আদমপুর বিমান ঘাঁটিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “ঘরে ঢুকে মারব। বাঁচার কোনো সুযোগও দেব না।” এই বক্তব্য শুধু রাজনৈতিক বার্তাই নয়, বরং স্পষ্টতই এক শক্তিশালী সামরিক মনোভাবের প্রতিচ্ছবি, যা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ ছড়াতে পারে।
মোদীর বক্তব্যে স্পষ্ট—ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী এখন অতীতের তুলনায় বহুগুণ বেশি শক্তিশালী এবং প্রযুক্তিনির্ভর। তিনি বলেন, “যে পাকিস্তানি সেনার উপর ভরসা করে তারা ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছিল, সেই সেনাবাহিনীকে আজ ছারখার করে দিয়েছে আমাদের সেনা, বিমানসেনা ও নৌসেনা। এখন পাকিস্তানে এমন কোনও জায়গা নেই, যেখানে তারা স্বস্তিতে বসে থাকতে পারে।”
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে ভারতের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রসঙ্গ। তিনি জানান, “আজ আমাদের কাছে এমন আধুনিক ড্রোন ও মিসাইল রয়েছে, যেগুলোর কথা ভাবলেই পাকিস্তানের ঘুম উড়ে যাচ্ছে। গত এক দশকে, ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছে বিশ্বের সেরা প্রযুক্তি, যা আমাদের সক্ষমতাকে বহু গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু আধুনিক অস্ত্র থাকলেই হয় না, তা দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও কৌশলের প্রয়োজন। আমাদের বাহিনী সেই ভারসাম্য রক্ষা করে প্রযুক্তিকে কৌশলের সঙ্গে যুক্ত করেছে। তারা প্রমাণ করে দিয়েছে যে, এই নতুন যুদ্ধে ভারতীয় বাহিনী প্রস্তুত এবং সক্ষম।”
এই বক্তব্যের সময় তিনি একাধিকবার পাকিস্তানের প্রতি তীব্র মনোভাব প্রকাশ করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মোদীর এই বার্তা একদিকে যেমন ঘরোয়া সমর্থকদের মন জয় করার কৌশল, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশলের এক শক্তিশালী প্রকাশ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ইতিহাসে এমন উত্তেজনাকর বক্তব্য আগেও শোনা গেছে, তবে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। ভারত এখন শুধু কথার শক্তিতে নয়, বরং প্রযুক্তি, গোয়েন্দা তথ্য ও সরাসরি আঘাত হানার সক্ষমতায় এগিয়ে গেছে। এটি একটি স্পষ্ট বার্তা যে, সীমান্ত পেরিয়ে যেকোনো হামলার জবাব এবার আরও বেশি পরিকল্পিত ও ধ্বংসাত্মক হতে পারে।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক কর্নেল (অব.) বিক্রম শর্মা বলেন, “মোদীর বক্তব্য শুধু মনোবলের প্রতিফলন নয়, এটি একটি কৌশলগত বার্তা। পাকিস্তান যদি কোনও ভুল পদক্ষেপ নেয়, তাহলে ভারত এবার আর শুধু কথা বলবে না, কাজ করে দেখাবে। ঘরে ঢুকে মারার কথা এক সময় স্লোগান ছিল, এখন সেটা বাস্তব পরিকল্পনা।”
এই বক্তব্যের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও নজর রাখছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের চলমান অবস্থানের ওপর। মোদীর কণ্ঠে দৃঢ়তার পাশাপাশি যে বার্তাটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, তা হলো—ভারত এখন আর ধৈর্যের পরীক্ষা দেবে না, বরং প্রত্যাঘাত করবে দ্বিগুণ শক্তিতে।