close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

গেজেটের মেয়াদ শেষ, শপথ নিতে পারলেন না ইশরাক

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে জয় নিশ্চিত করেও শপথ নিতে পারলেন না বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ইশরাক হোসেন। আইনি সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ায় বাতিল হয়ে গেল শপথের সুযোগ। ইশরাক বলছেন, এটি পরি..

আইনি সময়সীমা শেষ, শপথ থেকে বঞ্চিত ইশরাক হোসেন: রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র নাকি প্রশাসনিক ব্যর্থতা?

নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ে বিজয়ী ঘোষিত হওয়ার পর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছিলেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। কিন্তু সব প্রস্তুতি নিয়েও শেষ পর্যন্ত আর নেওয়া গেল না সেই শপথ। কারণ, গেজেট প্রকাশের পর নির্ধারিত ৩০ দিনের সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে সোমবার (২৬ মে) বিকেল ৪টায়। এর পর আইন অনুযায়ী আর শপথ নেওয়ার সুযোগ নেই।

এই সময়সীমার শেষ প্রহর পর্যন্ত শপথের চেষ্টা চালিয়ে গেছেন ইশরাকের আইনজীবীরা। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য তারা আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মন্ত্রণালয় কোনো লিখিত বা মৌখিক মতামত দেয়নি। ফলে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের ঘাটতির কারণেই থেমে গেল শপথগ্রহণ প্রক্রিয়া।

রাজনৈতিক কারণেই শপথ থেমে গেছে— বলছেন ইশরাক

ঘটনার পর প্রতিক্রিয়ায় ইশরাক হোসেন বলেন, “সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক কারণে আমাকে শপথ নিতে দেয়নি। এটা আদালত অবমাননার শামিল। আমরা উচ্চ আদালতে যাব এবং আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “জনগণের রায়ের প্রতি সরকারের কোনো শ্রদ্ধা নেই। নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়কে অস্বীকার করে প্রশাসন একটি প্রমাণ দিয়েছে যে, তারা ন্যায়ের পক্ষ নয়, তারা পক্ষপাতদুষ্ট।”

রিটকারী পক্ষের হুঁশিয়ারি: যাচ্ছি আপিল বিভাগে

ইশরাকের পক্ষে রিট দায়েরকারী এবং সিনিয়র আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি নিয়ে আপিল বিভাগে যাবেন। ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে লিগাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

“আমরা আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের স্বার্থে আইন মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করছি। শপথ না হওয়ার জন্য যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে আমরা আদালতের নির্দেশনা চাইব,” বলেন খোকন।

‘অদৃশ্য খেলার’ অভিযোগ রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিএনপি এবং তাদের সমর্থকরা বলছেন, এটি ছিল একটি ‘অদৃশ্য খেলা’ যেখানে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে ইশরাককে শপথ থেকে বিরত রাখা হয়েছে। তাদের ভাষায়, এটি একটি কৌশল যার মাধ্যমে বিএনপির বিজয়ী প্রার্থীকে ঠেকিয়ে রাখা হলো।

এক বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “ইশরাক যদি শপথ নিতেন, তাহলে সরকারের পক্ষে সেটা রাজনৈতিকভাবে বিব্রতকর হতো। তাই তারা চেয়েছে তাকে আটকে দিতে, এবং তারা সফলও হয়েছে।”

আইন মন্ত্রণালয়ের নিরবতা ও প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে

যেখানে উচ্চ আদালতের আদেশ ছিল স্পষ্ট, সেখানে আইন মন্ত্রণালয়ের নিরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকরাও। তারা বলছেন, এমন ঘটনায় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে। যদি আদালতের নির্দেশ অনুসরণ করা হতো, তাহলে আজ ইশরাক হোসেন একজন বৈধ মেয়র হিসেবে শপথ নিতে পারতেন।

শেষ কথা: বিজয়ী হয়েও পরাজিত— এটি কি নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা?

আইন, আদালত, সময়সীমা আর প্রশাসনিক জটিলতার এমন এক খেলা যেখানে একজন নির্বাচনী বিজয়ীকে শপথ নিতে না দিয়ে কার্যত পরাজিত করা হলো— এটি কি দেশের রাজনীতিতে নতুন বাস্তবতা? নাকি এটি একটি দৃষ্টান্ত, যা ভবিষ্যতে আরও অনেককে উদ্বিগ্ন করবে?

ইশরাক হোসেন ও তার দল এখন আদালতের দ্বারস্থ হবেন। তবে যে প্রশ্নটি আজ সবচেয়ে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা হলো— একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যদি আদালতের রায় পেয়েও শপথ নিতে না পারেন, তাহলে সেই গণতন্ত্র কতটা কার্যকর?

No comments found


News Card Generator