বাংলাদেশ সরকার দীর্ঘ বিতর্কের পর অবশেষে আজ রবিবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট গেজেট জারি করে আনুষ্ঠানিকভাবে পাস করতে পারে। চলতি বাজেটের পরিসংখ্যানে প্রায় ৭৯০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বাজেট পাসের আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন অর্থবিলে স্বাক্ষর করবেন বলে অর্থ মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে।
গত কয়েকদিন ধরে বাজেট নিয়ে নানান সমালোচনা ও আলোচনা হয়েছে, বিশেষ করে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিলের বিষয়ে। অর্থমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সকল ঝুঁকি কাটিয়ে উঠার লক্ষ্যে কাজ করেছেন। এ জন্য আজ নতুন অধ্যাদেশ জারি করে বাজেট পাসের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হবে।
স্থানীয় শিল্পের বিকাশের জন্য বিশেষভাবে এয়ারকন্ডিশনার কম্প্রেসরের মূলধনী যন্ত্রপাতিতে কর সুবিধা কিছুটা বহাল রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। এর পাশাপাশি ভ্যাটের আওতা বৃদ্ধিসহ আমদানি ও রপ্তানির খাতে কিছু পরিবর্তন আনা হতে পারে, যা অর্থনীতির গতি বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
সরকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পর সর্বসাধারণের জন্য অনলাইনে মতামত চেয়েছিল। দেশের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও অর্থনীতিবিদরা এ বাজেট নিয়ে নানা ধরনের পর্যালোচনা করেছেন। যদিও কিছু বিষয় নিয়ে আপত্তি থাকলেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা নেই।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আজ সকালে বাজেট পাসের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এরপর তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। চলতি নিয়ম অনুযায়ী, নতুন বাজেট আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
প্রসঙ্গত, প্রতিবছর বাজেট নিয়ে সংসদে তুমুল তর্কবিতর্ক হয়, তবে বর্তমানে সংসদ কার্যকর না থাকায় এ বিষয়ে আলোচনা হয় নি।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের এই বাজেটের মোট আকার চলতি বছরের বাজেটের তুলনায় প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা কম। বাজেটে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি ধরা হয়েছে, যা অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি গত কয়েক বছরে দ্রুত গতিতে উন্নতির পথে এগুচ্ছে। এসময় বাজেট যেমন সরকারের অর্থনৈতিক নীতির প্রতিফলন, তেমনি দেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের মাপকাঠিও। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে সরকার এ লক্ষ্য রেখেছেন বিভিন্ন কর সুবিধা ও শিল্প উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দেওয়ার মাধ্যমে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা।
সরকারি খাত ছাড়াও বেসরকারি খাতের উৎসাহ বৃদ্ধি ও ভ্যাট সংস্কারে নানাবিধ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর ফলে আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রম আরও মসৃণ ও দ্রুত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে বাজেটে উল্লেখিত বড় ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে। সরকার এ বিষয়ে সুসংগত পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
বাজেটের আনুষ্ঠানিক পাসের মাধ্যমে আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থনৈতিক বছরের শুরু হবে, যা দেশের অর্থনৈতিক দিকনির্দেশনাকে নতুন মাত্রা দেবে।