close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

গভীর রাতে ৭৫০ জনকে ঢুকানোর চেষ্টা: সীমান্তে বিজিবি-জনতার ব্যারিকেডে পিছু হটল ভারতীয় বিএসএফ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর সীমান্তে গভীর রাতে ভারতীয় বিএসএফ ৭৫০ জনকে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিতে চাইলেও বিজিবি ও স্থানীয় জনতার দৃঢ় প্রতিরোধে তাদের সে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। সারা রাত ধরে চলা উত্তেজনার পর পরিস্থি..

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের সীমান্তে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ঘটে গেল এক রুদ্ধশ্বাস ঘটনা। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) পরিকল্পিতভাবে ৭৫০ জনকে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালায়। এদের মধ্যে অধিকাংশই বাংলাদেশি নাগরিক, যারা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আটক ছিলেন। কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাও ছিল এই তালিকায়।

ঘটনার পেছনের প্রেক্ষাপট:

বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বিভিন্ন সময় আটক হওয়া প্রায় ৬০০ জন এবং রাজস্থানে আটক ১৪৮ জন বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নাগরিককে রাতের অন্ধকারে বাংলাদেশে পুশইনের সিদ্ধান্ত নেয় বিএসএফ। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্যই তারা গভীর রাতে বিজয়নগর সীমান্তে হাজির হয়।

বিজিবির তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ:

সীমান্তে অস্বাভাবিক তৎপরতার খবর পেয়ে মুহূর্তেই সতর্ক অবস্থান নেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে ২৫ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা সীমান্তে অবস্থান নেন এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ শুরু করেন।

জনতার গর্জন—প্রতিরোধে জনগণ:

এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয় লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে যায়। মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুক লাইভে এসে মানুষকে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। অল্প সময়েই সিঙ্গারবিল, বিষ্ণুপুর, নলঘরিয়া, মেরাসানী, নোয়াবাদী এলাকা থেকে শত শত লোক লাঠিসোঁটা হাতে সীমান্তে জড়ো হয়।

এই দৃপ্ত প্রতিরোধে ভীত হয়ে পিছু হটে বিএসএফ সদস্যরা। ফলে বড় ধরনের সংকট এড়ানো সম্ভব হয়।

প্রশাসনের বক্তব্য:

সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের সদস্য বাচ্চু মিয়া জানান, “রাত ২টার দিকে খবর পেয়ে আমরা জনগণকে আহ্বান করি। সবাই মিলে প্রতিরোধ গড়ে তোলায় বিএসএফ পিছু হটে যায়।”
অপর এক ইউপি সদস্য মামুন চৌধুরী বলেন, “মাইকিং করে জনগণকে জড়ো করা হয়, সবাই মিলে সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিবাদ গড়ে তোলায় বিএসএফের পক্ষে আর চাপ প্রয়োগ সম্ভব হয়নি।”

বিজয়নগর ইউএনওর মন্তব্য:

বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাধনা ত্রিপুরা জানান, “সীমান্তে এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। বিজিবি ও জনসাধারণের সহযোগিতায় পুশইন চেষ্টাটি রোধ করা গেছে। আমরা এখনো সতর্ক আছি।”

বিজিবির অফিসিয়াল অবস্থান:

২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাব্বার আহাম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, “পুশইনের গোপন তৎপরতা জানতে পেরে বিজিবি তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। স্থানীয় লোকজনও সহযোগিতা করায় বিএসএফকে পিছু হটতে হয়।”


 

এই ঘটনাটি শুধুমাত্র একটি সীমান্ত ঘটনার চেয়ে অনেক বেশি—এটি একটি বার্তা। যেখানে জনতার ঐক্য, বিজিবির সতর্কতা ও প্রশাসনের দায়িত্বশীলতা একসাথে মিলে জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করেছে। গভীর রাতে সীমান্তে ঘটে যাওয়া এই সাহসিকতা ও প্রতিরোধ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

Nenhum comentário encontrado