close
ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!
গাজীপুরে শ্রমিকদের মাঝে আতঙ্ক: স্যাম্পল রুমে বয়লার বিস্ফোরণে আহত ১২!
গাজীপুরের শ্রীপুরে অবস্থিত এইচডিএফ এ্যাপারেলস লিমিটেড নামক কারখানার স্যাম্পল রুমে ভয়াবহ এক বয়লার বিস্ফোরণ ঘটে, যার ফলে অন্তত ১২ জন শ্রমিক আহত হন। সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে এই বিস্ফোরণটি ঘটে। আহত শ্রমিকদের মধ্যে কিছু গুরুতর আহত হয়েছেন, আর বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয়রা এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রথম দিকে গাজীপুরের মাওনা চৌরাস্তার আল-হেরা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়, যেখানে জানা যায়, আহতদের মধ্যে ইয়াছিন আলীকে ময়মনসিংহে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং সুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
কীভাবে ঘটল বিস্ফোরণ?
গাজীপুরের এই ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে এইচডিএফ এ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার স্যাম্পল রুমে স্থাপিত বয়লারটিতে। ইলেকট্রিক ইনচার্জ সোহেল রানা জানান, বয়লারটি সকাল ৮টার দিকে চালু করা হয়েছিল, কিন্তু সম্ভবত কর্মীরা পানি সরবরাহের বিষয়টি ঠিকমতো নজর দেননি। ফলস্বরূপ, বয়লারটি পানি না পাওয়ার কারণে হিট হতে শুরু করে, এবং একসময় স্ট্রিম আউটলাইন ছিঁড়ে গিয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে একদিকে যেমন শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়, অন্যদিকে এটি কারখানার স্বাভাবিক কার্যক্রমেও বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি করে।
প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা ও করণীয়
বিস্ফোরণের পর স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে আহতদের দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হয়। মাওনা চৌরাস্তার আল-হেরা হাসপাতালের চিকিৎসক আলিম বিশ্বাস বলেন, “আমরা মোট ৬জন আহত রোগী পেয়েছি। তাদের মধ্যে গুরুতর কোনো ইনজুরি নেই, তবে সুজনের বাঁ পায়ে আঘাত পাওয়া যায়, যেটি চিকিৎসার জন্য গুরুতর। ইয়াছিন আলীকে তার পরিবার ময়মনসিংহ নিয়ে গেছে।”
এদিকে, এইচডিএফ এ্যাপারেলস লিমিটেড এর অ্যাডমিন ম্যানেজার এমআর শিপু চৌধুরী বলেন, “আজকের এই বিস্ফোরণটি ছিল সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে যে, স্যাম্পল রুমে ব্যবহৃত বয়লারটির ক্যাপাসিটি ৫ কেজি ছিল এবং এটি সাধারণত স্বাভাবিক নিয়মেই চলছিল। তবে, আজ এটি কোনো কারণে ঠিকমতো পানি পাচ্ছিল না, যার কারণে বিস্ফোরণটি ঘটে।”
এছাড়া, আহত শ্রমিকদের বেশিরভাগকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও, কিছু শ্রমিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এখনকার পরিস্থিতি:
এখনো পর্যন্ত, গাজীপুরের এইচডিএফ এ্যাপারেলস কারখানায় কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়নি। তদন্তকারীরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন এবং কারখানার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে আরো জানার চেষ্টা করছেন। তবে, বিস্ফোরণের কারণ সঠিকভাবে জানা না গেলে পুরো পরিস্থিতি স্পষ্ট নয়।
কারখানার কর্মকর্তা এবং আইনপ্রণেতারা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা আর না ঘটে।
শেষ কথা:
গাজীপুরের এই বয়লার বিস্ফোরণটি একটি বড় ধরনের কর্মসংস্থান সংকট সৃষ্টি করেছে। তবে, শ্রীপুরের স্থানীয় প্রশাসন, হাসপাতাল এবং কারখানার কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা ও দ্রুত পদক্ষেপের জন্য পরিস্থিতি বেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন সকলের দৃষ্টি প্রাথমিক চিকিৎসা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও দুর্ঘটনাগুলি পুনরায় ঘটানো থেকে রক্ষা পাওয়ার দিকে।
Aucun commentaire trouvé