close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

গাজাবাসীদের প্রতি ইসরাইলকে ‘দয়া’ দেখানোর আহ্বান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জেনেভায় দাঁড়িয়ে কান্না চেপে মানবতার আবেদন—বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতিকে ‘সভ্যতার লজ্জা’ বলে অভিহিত করে ইসরায়েলকে সহানুভূতির আহ্বান জানিয়েছেন। শান্তি ছাড়া বিকল্প নেই বলেও হুঁশি..

গাজা উপত্যকায় চলমান ভয়াবহ সংঘাত, মানবিক বিপর্যয় ও চিকিৎসাসেবা সংকটের প্রেক্ষিতে এক হৃদয়বিদারক ও মানবিক বার্তা দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মহাপরিচালক ড. ট্রেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসিস। জেনেভায় সংস্থাটির বার্ষিক সম্মেলনে এক আবেগঘন বক্তব্যে তিনি ইসরায়েলের প্রতি দয়া প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, "গণহত্যা ও অনাহারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার মানবতার জন্য আত্মঘাতী। শান্তিই একমাত্র পথ।"

ড. আধানম বলেন, "ইসরায়েলের নিজেদের স্বার্থেই এখন এই রক্তপাত বন্ধ করে শান্তির পথে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। ধ্বংস আর নিপীড়ন কখনো দীর্ঘমেয়াদে স্থায়ী সমাধান বয়ে আনে না। বরং এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আরও ভয়ংকর বিপদ তৈরি করে।"

যুদ্ধের স্মৃতিতে কেঁপে উঠলেন মহাপরিচালক

নিজের অতীত যুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতা তুলে ধরে গেব্রিয়াসিস বলেন, “আমি নিজেও যুদ্ধের বিভীষিকা দেখেছি। আমি গাজার শিশুদের কান্না অনুভব করতে পারছি। ক্ষুধার্ত মানুষের দৃষ্টি আমি চোখে দেখতে পাচ্ছি। যুদ্ধ যে কতটা ভয়ংকর মানসিক ক্ষত তৈরি করে, তা আমি জানি। আমি এখনও সেই শব্দ শুনতে পাই, গন্ধ অনুভব করি। এটা যুদ্ধ-পরবর্তী ট্রমার প্রতিফলন।”

তিনি গাজার পরিস্থিতিকে তুলনা করেন একটি 'মানবিক বিপর্যয়' হিসেবে, যেখানে মানুষ না খেয়ে, ওষুধের অভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে।

 খাবার ও চিকিৎসাকে অস্ত্র বানানো: সভ্যতার চরম অবনতি

“খাবার ও চিকিৎসা সরঞ্জামকে যদি যুদ্ধের অস্ত্র বানানো হয়, তাহলে তা মানবতা নয় বরং বর্বরতা,”— বলেন ডব্লিউএইচও প্রধান।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “একটি সভ্য জাতি কীভাবে পরিকল্পিতভাবে মানুষের খাদ্য ও চিকিৎসা বন্ধ করে দিতে পারে?” গাজায় যা হচ্ছে তা ‘সভ্যতার লজ্জা’ বলেও অভিহিত করেন তিনি।

গাজার শিশুরা খাবারের জন্য কাঁদছে, আহতরা হাসপাতালে জায়গা পাচ্ছে না, চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। অথচ বিশ্ব নীরব। এই নীরবতা ভেঙে মানবতা জাগানোর আহ্বান জানান তিনি।

অল্প কিছু ত্রাণ, কিন্তু কোথায় স্থায়ী সমাধান?

টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদনের বরাতে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো গাজার ওপর আরোপিত সর্বাত্মক অবরোধের মধ্যে জাতিসংঘ প্রায় ৯০টি ত্রাণবাহী ট্রাক বিতরণ করেছে। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও গেব্রিয়াসিস স্পষ্ট করেন—ত্রাণ নয়, রাজনৈতিক সমাধানই একমাত্র পথ।

তিনি বলেন, "এমন পরিস্থিতিতে যদি কেবল খাবার দিয়েই দায় শেষ করে ফেলি, তাহলে শান্তি কখনোই সম্ভব নয়।" তিনি জোর দেন—"টেকসই শান্তি চাইলে, আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।"

শেষ কথায় আশাবাদ

ডব্লিউএইচও প্রধানের বক্তব্যে একটি স্পষ্ট বার্তা ছিল—শান্তি, সহানুভূতি এবং মানবতা ফিরিয়ে আনা জরুরি।
গাজার প্রতিটি শিশুর কান্না, প্রতিটি অসুস্থ মানুষের আর্তনাদ যেন বিশ্ব বিবেককে জাগিয়ে তোলে, এমনটাই প্রত্যাশা তাঁর।

Inga kommentarer hittades


News Card Generator