close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

গাজায় স্কুলে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ২৫

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
গাজার একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া নিরীহ মানুষদের ওপর ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। নিহতদের মধ্যে রয়েছে শিশু, সাংবাদিক ও রেড ক্রস কর্মী। যুদ্ধাপরাধের নতুন নজির হিসেবে এই হামলা বিশ্ব বিবেককে নাড়া দি..

ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বশেষ হামলায় গাজার একটি স্কুল রক্তাক্ত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। সোমবার (২৬ মে) রাতে চালানো এই নৃশংস হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এই স্কুলটি মূলত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলেও চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সেটি আশ্রয়কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়েছিল। এখানে শত শত নারী, শিশু এবং বৃদ্ধ নিরাপত্তার আশায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নিরাপত্তা যেন পরিণত হলো মরণফাঁদে।

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুটি আন্তর্জাতিক রেড ক্রস সংস্থার কর্মী, একজন সাংবাদিক এবং বেশ কয়েকজন শিশু। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হামলার সময় স্কুলটিতে কোনো ধরনের সামরিক উপস্থিতি ছিল না। এটি ছিল কেবলমাত্র একটি বেসামরিক আশ্রয়স্থল।

ইসরায়েলের আগ্রাসন আরও তীব্র: এক সপ্তাহে নিহত ৬০০+

এই হামলার ঘটনা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। চলমান ইসরায়েলি অভিযান দিনকে দিন আরও ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। মাত্র এক সপ্তাহে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা ও স্থল অভিযানে নিহত হয়েছেন ৬০০ জনের বেশি মানুষ।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দীর্ঘ ১৯ মাস ধরে চলমান সামরিক অভিযানে নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৩১ শতাংশই শিশু। এই পরিসংখ্যান কেবল মর্মান্তিকই নয়, বরং একটি মানবাধিকার বিপর্যয়ের প্রতিচ্ছবি।

মানবিক বিপর্যয়: অনাহারে মৃত্যুর প্রহর গুনছে শিশুরা

ইসরায়েলি অবরোধে গাজায় খাদ্য, পানি, জ্বালানি এবং ওষুধ সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো একে বলছে ‘মনুষ্যসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ’।

জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (WFP) সতর্ক করেছে যে, গাজায় ৭০ হাজারেরও বেশি শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের অনেকেই অনাহারে মারা যেতে পারে।

গাজার ৭৭% নিয়ন্ত্রণে ইসরায়েল, ঘরছাড়া লাখো মানুষ

গাজার জনসংযোগ কার্যালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, ইসরায়েলি বাহিনী এখন পর্যন্ত গাজার প্রায় ৭৭ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এসব এলাকায় বসবাসরত মানুষদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে জোরপূর্বক, যার ফলে লাখো মানুষ উদ্বাস্তু জীবনযাপন করছেন।

এই ধরনের সামরিক অভিযানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মসজিদ এমনকি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত স্থাপনাও রেহাই পাচ্ছে না।

বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতা ও মানবাধিকার প্রশ্নে উদ্বেগ

এত বড় মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেও বিশ্বশক্তিগুলোর কার্যকর উদ্যোগের অভাব পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও মানবিক সংগঠন বারবার আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হলেও এখনও পর্যন্ত কোনো জবাবদিহি নিশ্চিত হয়নি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের চূড়ান্ত উদাহরণ। নিরীহ শিশু, সাংবাদিক ও মানবিক কর্মীদের হত্যা যুদ্ধাপরাধের আওতায় পড়ে এবং এর বিচার আন্তর্জাতিকভাবে হওয়া জরুরি।


শেষ কথা:
গাজার একটি স্কুলে হামলায় ২৫ জনের প্রাণহানি গোটা বিশ্বের মানবতা ও বিবেককে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার আহ্বান জানাচ্ছেন সকলে। এই ঘটনার বিচার হবে কি না—তা ভবিষ্যৎ বলবে, তবে নিরীহ মানুষের এই রক্তঝরা ইতিহাস আজ থেকেই লেখা হচ্ছে।

Nessun commento trovato