ইসরাইলি বাহিনীর সর্বশেষ বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় এক ভয়াবহ দিন পার হয়েছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ইসরাইলি বোমার আঘাতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৮৪ জন নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নাগরিক। একদিনে এতো সংখ্যক মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় গোটা বিশ্ব আবারও শিউরে উঠেছে।
তুর্কি বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানায়, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি আগ্রাসনে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ৪৩৯ জনে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত এক লাখ ১৭ হাজার ৪১৬ জন মানুষ, যাদের অনেকেই আজীবন পঙ্গুত্ব বরণ করতে বাধ্য হবেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, “অনেক আহত ব্যক্তি এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন। রাস্তা ও ভবনের ধ্বংসাবশেষে উদ্ধারকারীরা পৌঁছাতে পারছেন না। প্রাণহানির প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
এদিকে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা আসলে ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। নিখোঁজ বহু মানুষকে মৃত ধরে নেয়া হচ্ছে, যাদের লাশ এখনো মাটির নিচে কিংবা ভাঙা ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছে।
যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি দিয়েও ইসরাইল তা মানেনি। ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও, মার্চের ১৮ তারিখে আবারো হামলা শুরু করে তারা। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ২,০৬২ জন নিহত ও ৫,৩৭৫ জন আহত হয়েছেন।
এই আগ্রাসনের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো—গত ২ মার্চ থেকে ইসরাইল গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে। খাবার, ওষুধ ও পানি সংকটে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। শিশুরা ক্ষুধার যন্ত্রনায় কাঁদছে, হাসপাতালে চিকিৎসা নেই, আশ্রয়স্থল নেই—এই চিত্র এখন গাজার প্রতিটি কোনায়।
ইসরাইলের এই নৃশংসতা আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত হলেও কার্যকর কোনো প্রতিরোধ এখনো দেখা যায়নি। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (ICJ) ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা চলছে।