গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর প্রবল আক্রমণে অন্তত ৫১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে আহত ও মৃতদেহ পৌঁছানোর তথ্য প্রকাশ করেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত একদিনে গাজার হাসপাতালগুলোতে ১১৬টি মৃতদেহ ভর্তি হয়েছে এবং অন্তত ৪৬৩ জন আহত ব্যক্তির চিকিৎসা চলছে।
এই হানাহানির পেছনে অবরুদ্ধ গাজার মানুষের জীবনযাত্রার আরও এক দুঃসহ অধ্যায় শুরু হয়েছে। ২০২৩ সালের ১৮ মার্চ থেকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে অস্ত্রবিরতি ভঙ্গের পর থেকে এখানে ব্যাপক সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই সময় থেকে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মোট ৬,৩১৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২২,০৬৪ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে, গত অক্টোবরে শুরু হওয়া সাম্প্রতিক যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৫৬,৬৪৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৩৪,১০৫ জন আহত হয়েছেন। এই বিশাল সংখ্যক হতাহতের তথ্য থেকে স্পষ্ট যে, ইসরায়েল-হামাস সংঘাত এক ভয়াবহ মানবিক সংকটে রূপ নিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য অবকাঠামো ইতোমধ্যেই ধ্বংসপ্রাপ্ত। হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং জরুরি চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অসহায় রোগীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বহু পরিবার এমন পরিস্থিতিতে জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন যেখানে জীবনরক্ষাকারী সহায়তা প্রায় শূন্যের কোঠায় পৌঁছেছে।
এই অবরুদ্ধ এলাকায় প্রতিদিনের সহিংসতা বিশ্ববাসীর বিবেককে ঝঙ্কিত করে তুলেছে। কিন্তু, এ পর্যন্ত কোনও কার্যকর কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি যা সহিংসতা বন্ধ করতে পারবে। গাজার সাধারণ মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে এবং তারা মানবিক সাহায্য ও শান্তির আকাঙ্ক্ষায় দিনাতিপাত করছে।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলা হচ্ছে, এই মানবিক সংকট মোকাবেলায় দ্রুত এবং সমন্বিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। নয়তো এই ঘাতক সংঘাতের কারণে অসংখ্য নিরীহ মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে, আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইতিহাস নতুন মাত্রা পাবে।
গাজার এই দুঃসহ পরিস্থিতি বিশ্ব শান্তি, মানবিকতা এবং ন্যায়বিচারের প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। এখন প্রয়োজন জোরালো কূটনৈতিক চেষ্টার মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান এনে মানুষের জীবন বাঁচানো।



















