বাংলাদেশের কৃষিভিত্তিক সমাজে গাছ লাগানোর গুরুত্ব অপরিসীম। পরিবেশ রক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধ, খাদ্য ও বনজ সম্পদ বৃদ্ধির জন্য গাছ লাগানো অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। গ্রীষ্মের শেষ এবং বর্ষার শুরু — অর্থাৎ জুন থেকে আগস্ট মাস — গাছ লাগানোর সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এই সময়ে মাটিতে প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বেশি থাকে, যা গাছের দ্রুত ও দৃঢ়ভাবে বেড়ে উঠতে সহায়তা করে। গাছ লাগানোর উপকারিতা: ১. পরিবেশ সংরক্ষণ: গাছ কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে অক্সিজেন সরবরাহ করে, যা পরিবেশ দূষণ কমাতে সহায়ক। ২. জলবায়ু পরিবর্তন রোধ: গাছ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং খরা ও বন্যার প্রভাব কমাতে সহায়তা করে। ৩. জীববৈচিত্র্য রক্ষা: গাছপালা বিভিন্ন প্রাণীর আবাসস্থল সরবরাহ করে, ফলে জীববৈচিত্র্য রক্ষিত হয়। ৪. অর্থনৈতিক উন্নতি: ফল, কাঠ ও ঔষধি গাছ বিক্রি করে আয় বৃদ্ধি করা সম্ভব। ৫. মাটি রক্ষা: গাছের শেকড় মাটিকে দৃঢ় করে, ফলে ভূমিক্ষয় ও নদীভাঙন কমে। বিশেষজ্ঞ মতামত: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, "গাছ লাগানো শুধু আমাদের ব্যক্তিগত দায়িত্ব নয়, বরং বৈশ্বিক পরিবেশ রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সময়মতো গাছ লাগালে তার বৃদ্ধি বেশি হয় এবং উপকারিতাও বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।" উদ্যোগ ও সচেতনতা: সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রতি বছর ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ অভিযান চালানো হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত ও গ্রামগঞ্জে গাছ লাগানোর প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। তরুণ প্রজন্মকেও গাছ লাগানোর কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নানা ধরনের প্রচারণা চালানো হচ্ছে। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, প্রতিটি নাগরিক যদি বছরে অন্তত একটি করে গাছ লাগান ও পরিচর্যা করেন, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ ও বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
Geen reacties gevonden