close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

গা জা য় ই স রায়েলি হা ম লা য় ২৪ ঘণ্টায় ৭২ ফিলিস্তিনি নি হ ত..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর তীব্র হামলায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৭২ জন, আহত ১৭৪। ফের উত্তপ্ত পরিস্থিতি—যুদ্ধবিরতি উপেক্ষা করে চালানো হচ্ছে নির্মম অভিযান।..

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আবারও ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। শুক্রবার, ২৭ জুন, দিনভর চলা টানা বিমান ও স্থল অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৭২ জন নিরীহ ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৭৪ জন।

এই তথ্য নিশ্চিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি এক প্রতিবেদনে জানায়, গাজায় এ একদিনেই সংঘটিত হতাহতের সংখ্যা সাম্প্রতিক সময়ে নজিরবিহীন।

প্রতিদিনের মতোই আরও এক বিভীষিকাময় দিন পার করল গাজাবাসী। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫৬,৩৩১ জন ফিলিস্তিনি। একই সময়ে আহত হয়েছেন ১,৩২,৬৩২ জন মানুষ।

এই নির্মম অভিযান শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যেদিন হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে আকস্মিক হামলা চালায়। তাদের হামলায় নিহত হয় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নাগরিক এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয় গাজায়।

হামাসের সেই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF)। টানা ১৫ মাস ধরে একটানা চালানো এই হামলা আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ সত্ত্বেও এখনও থামেনি।

১৯ জানুয়ারি, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েল সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়। তবে সেই বিরতি দুই মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই, ১৮ মার্চ থেকে ফের শুরু হয় দ্বিতীয় দফার ভয়াবহ অভিযান।

এই নতুন পর্যায়ের আক্রমণে ইতোমধ্যেই ৬,০০৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ২০,৫৯১ জনের বেশি।

প্রথম দফায় ধরে নিয়ে যাওয়া ২৫১ জন ইসরায়েলি জিম্মির মধ্যে এখনো বেঁচে আছেন অন্তত ৩৫ জন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইডিএফ ঘোষণা করেছে, তারা সামরিক অভিযানের মাধ্যমেই এই জিম্মিদের মুক্ত করবে।

এই সিদ্ধান্তের জেরে আবারও তীব্র হয়েছে হামলার মাত্রা। গাজার বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক চালানো হচ্ছে বিমান হামলা, মিসাইল নিক্ষেপ এবং স্থল অভিযান।

এই হামলার প্রতিবাদে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একাধিকবার ইসরায়েলকে সামরিক অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। এমনকি আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ICJ)-এ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা পর্যন্ত দায়ের করা হয়েছে।

তবে এসব আন্তর্জাতিক চাপকে তোয়াক্কা করছেন না ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, “হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল এবং জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে।”

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র একটি নতুন দুই মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এখনও সেই প্রস্তাব অনুমোদন করেনি কেউ—না হামাস, না ইসরায়েল।

ফলে অনিশ্চয়তার মধ্যে দুলছে গাজার আকাশ। মানুষের জীবন এখন শুধুই সংখ্যা। প্রতিদিনই বাড়ছে লাশের সারি।

গাজার আকাশে শান্তির কোনো সম্ভাবনা নেই আপাতত। প্রতিটি দিন যেন এক নতুন মৃত্যুদিন। শিশুর কান্না, ধ্বংসস্তূপ, ধোঁয়ায় ভরা আকাশ, আর সাইরেনের শব্দ—এই গাজা যেন এখন এক জীবন্ত মৃত্যুপুরী।

দুনিয়ার শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে গাজার এই নরকযন্ত্রণা কোথায় গিয়ে থামবে, তা কেউ জানে না।

Keine Kommentare gefunden