close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

গা জা য় ২ শতাধিক সাংবাদিক নি হ ত, জাতিসংঘের সতর্কতা জারি

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিশ্ববাসীর চোখ এড়িয়ে গাজায় ভয়াবহ নৃশংসতা—ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২১১ জন সাংবাদিক, নারীও বাদ নেই। জাতিসংঘ বলছে, এটি কেবল হত্যাকাণ্ড নয়, যুদ্ধাপরাধের সরাসরি প্রমাণ!..

গাজায় ভয়াবহ গণহত্যার ছায়া: সাংবাদিকদের লক্ষ করে ‘যুদ্ধাপরাধ’, জাতিসংঘের কঠোর বার্তা

বিশ্ব যখন বিশ্ব প্রেস স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপন করছে, ঠিক তখনই গাজায় রক্তাক্ত বাস্তবতা চিত্রিত হলো এক ভয়াবহ প্রতিবেদন দিয়ে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় (OHCHR) নিশ্চিত করেছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় নিহত হয়েছেন ২১১ জন সাংবাদিক। নিহতদের মধ্যে ২৮ জন নারী, যা এই হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতা আরও জোরালোভাবে তুলে ধরে।

এই ঘোষণা আসে ৩ মে শুক্রবার, প্রেস স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত জাতিসংঘের বিবৃতিতে। গাজার মানবিক বিপর্যয় এবং সাংবাদিকদের ওপর পরিকল্পিত আক্রমণের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, “এই হত্যাকাণ্ড কেবল দুর্ঘটনা নয়, বরং আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে যুদ্ধাপরাধ।”

প্রেস ভেস্ট থেকেও রক্ষা নেই

একজন সাংবাদিক জাতিসংঘকে জানান, “আজকাল 'PRESS' লেখা ভেস্ট পরা মানেই আপনি আর নিরাপদ নন, বরং এটি আপনাকে শত্রুর মূল লক্ষ্য বানিয়ে দেয়।” তার মতে, ইসরায়েলি বাহিনী স্পষ্টতই সাংবাদিকদের চিহ্নিত করে হামলা চালাচ্ছে।

ইউনেসকোর তথ্য অনুযায়ী, কমপক্ষে ৪৭ জন সাংবাদিক তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য বলছে, বর্তমানে ইসরায়েলি বন্দিশিবিরে ৪৯ জন সাংবাদিক আটক রয়েছেন।

আটক সাংবাদিকদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা

ইসরায়েলের সেনা বাহিনীর হাতে আটক সাংবাদিকরা জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরকে জানিয়েছেন, তারা মর্মান্তিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের নামে মারধর, অপমান, এমনকি যৌন এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাও চালানো হয়েছে তাদের ওপর। জাতিসংঘ বলছে, এটি কেবল ব্যক্তি নির্যাতন নয়, বরং ফিলিস্তিনি মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের ওপর ভয় দেখানোর জন্য সংগঠিত একটি কাঠামোগত নিপীড়ন, যার সঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধের মিল রয়েছে।

ইসরায়েলি অভিযান আরও ভয়ংকর হতে যাচ্ছে

এদিকে, হামাসের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি না থাকায় ইসরায়েল গাজায় তাদের সামরিক অভিযানের পরিধি বাড়াতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচার সংস্থা ‘ক্যান’ জানিয়েছে, নতুন এই অভিযানে আরও রিজার্ভ সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও টানা অভিযানে সেনাদের শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

সেনাপ্রধান এয়াল জামির ইতোমধ্যে এই অভিযানের পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন। এর আওতায় দক্ষিণ গাজার মোরাগ করিডোর ও রাফাহর মধ্যবর্তী এলাকায় একটি নতুন ‘মানবিক অঞ্চল’ গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে।

মানবিক অঞ্চল না ‘প্রতারণার আবরণ’?

ইসরায়েল বলছে, এই অঞ্চলে নিরাপত্তা যাচাইয়ের পর নিরীহ ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তর করা হবে। এরপর সেখানে মার্কিন বেসরকারি সংগঠনগুলোর মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ চালানো হবে। যদিও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, এই তথাকথিত ‘মানবিক অঞ্চল’ আসলে গোপন নিয়ন্ত্রণ কৌশলের অংশ।


 

গাজায় চলমান এই গণহত্যা, বিশেষ করে সাংবাদিকদের টার্গেট করে চালানো হামলা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখে এক ভয়ংকর বার্তা—যেখানে সত্য বলার মানুষগুলোকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে নিঃসংশয়ে। জাতিসংঘের স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে, এটি শুধুই হত্যাকাণ্ড নয়—এটি যুদ্ধাপরাধ। এখন বিশ্ব কি জেগে উঠবে? নাকি গাজার শিশুর মতো সাংবাদিকরাও কেবল সংখ্যা হয়ে থাকবে খবরে?

Ingen kommentarer fundet


News Card Generator