ফরিদপুরের নগরকান্দায় আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটুনি

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নগরকান্দায় বিএনপি নেতাদের উস্কানিতে আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আবুল কালামকে পিটুনি, হামলার কারণ রাজনৈতিক বিরোধ ও কার্ড বিতরণ নিয়ে বিরোধ।..

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেতা ও ডাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালামকে বিক্ষুব্ধরা নির্মমভাবে লাঞ্ছিত করেছে। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার সময় উপজেলা চত্বরে ঘটে এই ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপি নেতাদের উসকানিতে কাজী আবুল কালামের উপর হামলার ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম যখন উপজেলা চত্বরে উপস্থিত হন, তখন সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন কয়েকজন বিএনপি নেতা ও বিক্ষুব্ধ জনতা। তারা হঠাৎ করে তার উপর চড়াও হয়ে জামার কলার ধরে টেনে হিঁচড়ে, কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে শুরু করে। কয়েক মিনিটের এই হামলায় তিনি প্রাণে বাঁচতে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান। বিক্ষুব্ধরা তাকে ধাওয়া করলেও শেষ পর্যন্ত তারা তাকে ধরতে পারেনি।

স্থানীয়রা জানান, কাজী আবুল কালাম ক্ষমতায় থাকার সময় নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে হামলা, মামলা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করার। অন্যদিকে, ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম বলেন, তিনি স্থানীয় শিশু কার্ড সংশোধন তালিকা নিয়ে উপজেলা অফিসে গেলে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান মুকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত আলী শরীফসহ প্রায় ১৫-২০ জনের দল তার উপর হামলা চালায়। তিনি অভিযোগ করেন, এই হামলায় তার জীবননাশের হুমকিও দেওয়া হয়।

উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান মুকুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আর সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত আলী শরীফ হামলার খবর শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেন, স্থানীয়দের মধ্যে ভিজিএফ কার্ড বিতরণ নিয়ে তর্কবিতর্ক ছিল, যা বিএনপি কর্মীরা করলেও তারা হামলার সাথে জড়িত নন।

নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, লোকমুখে খবর শুনেছেন কাজী আবুল কালামের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, তবে এখনো থানায় কোনো অভিযোগ আসে নি। পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।

নগরকান্দা উপজেলা ও ফরিদপুর জেলা এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। দলীয় নেতাদের মধ্যে পুরনো বিবাদ ও তৎপরতা এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের সংঘর্ষ এড়াতে উভয় পক্ষের কাছে শান্তি-সমঝোতার আহ্বান জানানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনা শুধু স্থানীয় রাজনীতি নয়, বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক সহিংসতার ধারাকেও ফুটিয়ে তোলে। নির্বাচন কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের কার্ড বিতরণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোতে মনোমালিন্য থাকায় সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয় বলেই মনে করছে এলাকার অনেকেই।

ফরিদপুরের এই ঘটনায় রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে ব্যস্ত থাকলেও সাধারণ মানুষ শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রত্যাশা করছে। ভবিষ্যতে যেন এমন সংঘর্ষ আর না ঘটে, সেই লক্ষ্যে সকল পক্ষকে সংযম ও ধৈর্যের আহ্বান জানানো হচ্ছে।

Ingen kommentarer fundet


News Card Generator