close
লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!
ফরিদপুরে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষে ৩০টি বাড়ি ভাঙচুর, আহত ৮, উত্তেজনা অব্যাহত


ফরিদপুরের কানাইপুর ইউনিয়নের ফুসরা গ্রামে আজ সকালে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত ৩০টি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এই ঘটনায় ৮ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৩ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার পটভূমি:
কানাইপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্কাস মাতুব্বর ও বিএনপির সভাপতি হাশেম খানের মধ্যে এলাকার আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জের ধরেই রবিবার বিকেলে একটি পুকুরে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তা সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণে আসে, এবং দু'পক্ষের নেতা পুলিশ অফিসারের সঙ্গে কথা বলে সংঘর্ষে না যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
তবে, আজ সকালে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। হাশেম খানের সমর্থকেরা আক্কাস মাতুব্বর ও তার সমর্থকদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন এবং গরু-ছাগল লুট করেন। উত্তেজনা আরও বাড়ানোর জন্য আক্কাস মাতুব্বরের সমর্থকরা পাল্টা হামলা চালিয়ে হাশেম খানের বাড়িতে ভাঙচুর করেন। সংঘর্ষে ৩০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আহতদের অবস্থা:
সংঘর্ষের ফলে আটজন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ:
ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষের পর স্থানীয় পুলিশ, সেনা সদস্য এবং র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদ উজ্জামান জানান, বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি।
পূর্বের বিরোধের জের:
কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন জানিয়েছেন, আক্কাস মাতুব্বর ও হাশেম খানের মধ্যে আগে থেকেই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল। তিনি বলেন, "এবারও সেই বিরোধের ফলস্বরূপ এই সংঘর্ষ ঘটেছে।"
আক্কাস মাতুব্বর অভিযোগ করে বলেন, "রবিবার রাতে পুলিশের হস্তক্ষেপে আমরা একে অপরকে হামলা না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। কিন্তু হাশেম খান তা মানেননি। তাঁর সমর্থকেরা আজ সকালে আমার বাড়ি ও সমর্থকদের বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করেছেন।"
অপরদিকে, হাশেম খান দাবি করেছেন যে, আক্কাস মাতুব্বরের সমর্থকরা তাঁর বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করেছেন।
শেষ কথা:
ফরিদপুরে এই সংঘর্ষের ঘটনা স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে ভয়-ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের বন্যা চললেও, এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে।
Walang nakitang komento