close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ফ্লু এবং করোনার পার্থক্য কীভাবে বুঝবেন: বিস্তারিত বিশ্লেষণ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
কেন এই পার্থক্য জানা জরুরি? বিশ্বজুড়ে শীতের সময় এলেই ফ্লুর প্রকোপ বেড়ে যায়। করোনা মহামারির পর থেকে সাধারণ ফ্লু ও কোভিড-১৯ নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈ
কেন এই পার্থক্য জানা জরুরি? বিশ্বজুড়ে শীতের সময় এলেই ফ্লুর প্রকোপ বেড়ে যায়। করোনা মহামারির পর থেকে সাধারণ ফ্লু ও কোভিড-১৯ নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এই দুই রোগের লক্ষণ অনেকাংশে মিল থাকায় অনেকে বুঝতে পারেন না, তাঁরা সাধারণ ফ্লুতে আক্রান্ত, নাকি করোনাভাইরাসে। এই বিভ্রান্তি দূর করা জরুরি, কারণ ভুল ধারণা থেকে ভুল চিকিৎসা হতে পারে, যা বিপজ্জনক হতে পারে। এই প্রতিবেদনে আমরা ফ্লু এবং করোনার মধ্যে পার্থক্য বিশদভাবে আলোচনা করব, যাতে সহজেই বোঝা যায় কখন কোন ভাইরাসের সংক্রমণ হচ্ছে এবং কীভাবে প্রতিকার করা উচিত। ফ্লু এবং করোনাভাইরাসের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ফ্লু: সংক্ষিপ্ত বিবরণ ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ যা প্রধানত শীতের সময় বৃদ্ধি পায়। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের বিভিন্ন স্ট্রেইন রয়েছে, যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা A, B, C এবং D। লক্ষণসমূহ: জ্বর কাশি গলা ব্যথা নাক বন্ধ বা নাক দিয়ে পানি পড়া ক্লান্তি ও শরীরে ব্যথা করোনাভাইরাস (COVID-19): সংক্ষিপ্ত বিবরণ করোনাভাইরাস (SARS-CoV-2) প্রথম ২০১৯ সালে চীনের উহানে শনাক্ত হয় এবং পরে এটি মহামারিতে রূপ নেয়। করোনাভাইরাস ফ্লুর মতো শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়, তবে এর লক্ষণগুলো ভিন্ন হতে পারে। লক্ষণসমূহ: জ্বর শুকনো কাশি শ্বাসকষ্ট স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতি হারানো দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি বমি বমি ভাব বা ডায়রিয়া (কিছু ক্ষেত্রে) ফ্লু ও করোনার পার্থক্য কীভাবে বুঝবেন? ১. লক্ষণের সময়কাল ফ্লু: হঠাৎ করেই লক্ষণগুলো শুরু হয় এবং দ্রুত তীব্র হয়। সাধারণত ৩-৭ দিনের মধ্যে উন্নতি হয়। করোনা: লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং সংক্রমণের ৫-১৪ দিনের মধ্যে বাড়তে পারে। ২. স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতি ফ্লু: সাধারণত স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতি পরিবর্তন হয় না। করোনা: আক্রান্তদের মধ্যে অনেকেই স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতি হারিয়ে ফেলেন। এটি কোভিড-১৯ এর অন্যতম প্রধান লক্ষণ। ৩. সংক্রমণের হার ও ঝুঁকি ফ্লু: প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ ফ্লুতে আক্রান্ত হন, তবে এর মৃত্যুহার তুলনামূলক কম। করোনা: করোনা তুলনামূলক বেশি সংক্রামক এবং গুরুতর ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক হতে পারে। ৪. শ্বাসকষ্ট ফ্লু: ফ্লুতে সাধারণত শ্বাসকষ্ট হয় না, তবে গুরুতর সংক্রমণের ক্ষেত্রে হতে পারে। করোনা: শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসে সংক্রমণ করোনা আক্রান্তদের প্রধান সমস্যা। বিশেষজ্ঞদের মতামত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্লু ও করোনার লক্ষণের মধ্যে মিল থাকলেও কিছু স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। ড. মারিয়া ভ্যান কারখোভ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ, বলেন: "কোভিড-১৯ এর অন্যতম লক্ষণ হল স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতি হারানো, যা সাধারণ ফ্লুতে দেখা যায় না। এছাড়াও, করোনায় গুরুতর শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি বেশি।" বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (IEDCR)-এর প্রধান বিজ্ঞানী ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান: "ফ্লু ও করোনা উভয়ই ভাইরাসজনিত সংক্রমণ হলেও কোভিড-১৯ বেশি সংক্রামক এবং জটিলতা তৈরি করতে পারে। তাই লক্ষণ দেখা দিলে করোনা পরীক্ষা করানো উচিত।" কীভাবে নিশ্চিত হবেন কোন রোগ হয়েছে? নিশ্চিত হওয়ার জন্য টেস্ট করানো সবচেয়ে ভালো উপায়। পরীক্ষার ধরন: RT-PCR টেস্ট: করোনার জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা। অ্যান্টিজেন টেস্ট: দ্রুত ফলাফল দেয়, তবে কম নির্ভরযোগ্য। ইনফ্লুয়েঞ্জা টেস্ট: ফ্লু শনাক্ত করতে ব্যবহার হয়। প্রতিরোধ ও সুরক্ষা ফ্লু প্রতিরোধের উপায়: ফ্লু ভ্যাকসিন নেওয়া হাত ধোয়া ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জনসমাগম এড়ানো করোনা প্রতিরোধের উপায়: কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেওয়া মাস্ক পরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ফ্লু ও করোনার মধ্যে পার্থক্য বোঝা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে সঠিক চিকিৎসা নেওয়া যায়। যদি আপনি জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন, তবে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। করোনা এখনো সম্পূর্ণ নির্মূল হয়নি, তাই আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি। সর্বোপরি, টিকা নেওয়া, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং সচেতনতা বৃদ্ধিই আমাদের সুরক্ষিত রাখবে।
Nenhum comentário encontrado