ফিরোজায় ফেরার দিনে রাজপথে জনস্রোত: খালেদা জিয়ার প্রত্যাবর্তনের রাজনৈতিক তাৎপর্য..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
খালেদা জিয়া ফিরেছেন—কিন্তু শুধু একজন অসুস্থ নেত্রী হিসেবে নয়, বরং রাজনীতির ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরিকে আবার জাগিয়ে তোলার প্রতীক হয়ে।..

৬ মে, ২০২৫ — এক ঐতিহাসিক দিন। দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ঢাকায় প্রত্যাবর্তন যেনো একটি রাজনৈতিক পালাবদলের বার্তা নিয়ে এসেছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে গুলশান ফিরোজা পর্যন্ত—রাজপথে ছিল জনতার ঢল, আবেগ, আর প্রতীক্ষার বিস্ফোরণ।

খালেদা জিয়ার এই প্রত্যাবর্তন একদিকে তার রাজনৈতিক জীবনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, অন্যদিকে এটি বিএনপির ভবিষ্যৎ রাজনীতির দিকনির্দেশনা হিসেবেও অনেকে দেখছেন। দীর্ঘদিন পর দলের নেত্রীকে সামনাসামনি পেয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়ে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা।
এই সফরের মাধ্যমে দীর্ঘ সাত বছর পর লন্ডনে ছেলের সঙ্গে দেখা হয় বেগম জিয়ার। এটাও দলের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের ক্ষেত্রে একটি নতুন বার্তা বহন করে।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফেরেন তার দুই পুত্রবধূ—জোবাইদা রহমান ও শর্মিলা রহমান। কিন্তু সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হলো, রাজপথে খালেদা-তারেকের পাশাপাশি জোবাইদা রহমানের নামেও স্লোগান ও ব্যানার উঠে আসে।
এই ঘটনা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভবিষ্যতের রাজনীতি ও নেতৃত্বে জোবাইদা রহমানের সক্রিয় অংশগ্রহণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
একটি মহল বলছে—এটি আসন্ন সময়ের জন্য বিএনপির পরিকল্পিত "নতুন প্রজন্মের নেতৃত্বে" রূপরেখার সূচনা।


রাজপথে হাজারো মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ—দলীয় পরিচয়ের বাইরেও অনেক সাধারণ মানুষের উপস্থিতি—স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়, খালেদা জিয়া এখনো রাজনীতিতে একটি জীবন্ত প্রতীক। সরকারবিরোধী জনগণের ক্ষোভ এবং পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা তার প্রত্যাবর্তনের সঙ্গেই যেন একাত্ম হয়েছে।

একদিকে যেখানে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল, স্লোগান ও উল্লাসে মেতে উঠেছে, অন্যদিকে পুরো পথজুড়ে সরকারের কঠোর নিরাপত্তা বলয় ছিল লক্ষণীয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারি প্রশাসনের প্রস্তুতি দেখে বোঝা যায়, সরকার এই ঘটনায় সম্ভাব্য রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক।

বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে বিএনপির অঙ্গসংগঠনগুলোর পূর্বনির্ধারিত অবস্থান—এই অভ্যর্থনা আয়োজন কেবল আবেগ নয়, বরং সুসংগঠিত রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের একটি নমুনা।
বিএনপির সাংগঠনিক দক্ষতা এবং মাঠের উপস্থিতি প্রমাণ করে, দলটি ভবিষ্যতের জন্য আবার সক্রিয়ভাবে প্রস্তুত হচ্ছে।

এই প্রত্যাবর্তন কি শুধুই ব্যক্তিগত চিকিৎসা শেষে ফেরার ঘটনা? না কি, এটি একটি নতুন রাজনৈতিক সূচনার নাম?
এমন প্রশ্ন রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
তারেক রহমান এবং জোবাইদা রহমানের সম্ভাব্য রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ, খালেদা জিয়ার অবস্থান—সবকিছু মিলিয়ে বিএনপির ভেতরে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে।

খালেদা জিয়া ফিরেছেন—কিন্তু শুধু একজন অসুস্থ নেত্রী হিসেবে নয়, বরং রাজনীতির ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরিকে আবার জাগিয়ে তোলার প্রতীক হয়ে। রাজপথে জনতার স্রোত, স্লোগানে নাম উচ্চারিত হওয়া নতুন মুখ, আর সরকারের সতর্ক দৃষ্টি—সবই ইঙ্গিত করে, বাংলাদেশের রাজনীতি আবারো একটি নতুন মোড়ের সামনে দাঁড়িয়ে।

Geen reacties gevonden


News Card Generator