close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

ফেসবুক লাইভে ওসিকে পেটানোর হুমকি! চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী সাজ্জাদের ভয়ঙ্কর তাণ্ডব

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চট্টগ্রামে ভয়ঙ্কর এক সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে ফেসবুক লাইভে এসে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ হোসেনকে পেটানোর হুমকি দিয়েছেন। মঙ্গলবার (গতকাল) রাত ১০টা ৩৯ মিনি
চট্টগ্রামে ভয়ঙ্কর এক সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে ফেসবুক লাইভে এসে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ হোসেনকে পেটানোর হুমকি দিয়েছেন। মঙ্গলবার (গতকাল) রাত ১০টা ৩৯ মিনিটে নিজের ফেসবুক লাইভে এসে নগর পুলিশের বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসিকে অক্সিজেনে ধরে এনে পেটানোর ঘোষণা দেন সাজ্জাদ হোসেন নামের এই দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। লাইভে গালিগালাজ ও হুমকি মাত্র ২ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের ওই লাইভ ভিডিওতে ওসি আরিফকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ করেন সাজ্জাদ। তিনি বলেন, "ওসি আরিফ, তুমি দেশের যে প্রান্তেই থাকো, তোমাকে অক্সিজেনে ধরে এনে পেটাবো! প্রয়োজনে আমি মরে যাবো, কিন্তু হার মানবো না!" ওসির জিডি ও পুলিশের অবস্থান ওসিকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি নিজেই থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সন্ত্রাসী সাজ্জাদের অপতৎপরতা বন্ধ করতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বায়েজিদ থানা-পুলিশ। গত সোমবার তার সহযোগীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওসি আরিফ। সন্ত্রাসী সাজ্জাদের অতীত অপকর্ম সাজ্জাদ হোসেন মূলত একটি কুখ্যাত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য। তিনি বিদেশে পলাতক ‘শিবির ক্যাডার’ হিসেবে পরিচিত সাজ্জাদ আলীর অনুসারী। অপরাধ জগতে পা রাখার পর থেকেই তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা: 🔹 হত্যা মামলা 🔹 অস্ত্র আইন লঙ্ঘনের মামলা 🔹 চাঁদাবাজির ১০টি মামলা গত বছরের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করেছিল। তবে এক মাস পর জামিনে বেরিয়ে আসেন তিনি। সর্বশেষ গত বছরের ৪ ডিসেম্বর অক্সিজেন এলাকায় পুলিশ তাকে ধরতে গেলে সে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায়। তিন লাখ বাসিন্দা আতঙ্কে! চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ ও হাটহাজারী থানার অন্তত তিন লাখ মানুষ এই সন্ত্রাসীর কারণে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তার চাঁদাবাজির বিষয়টি এখন আর গোপন নেই, বরং প্রকাশ্যেই চলে। মূলত নির্মাণাধীন ভবন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য খাত থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে আসছেন সাজ্জাদ। গুলির মাধ্যমে চাঁদাবাজি! 🔸 গত ১৮ সেপ্টেম্বর: বায়েজিদ কালারপুল এলাকায় এক নির্মাণাধীন ভবনে চাঁদা না পেয়ে গুলি চালায় সাজ্জাদ। ভবনমালিকদের পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হয়। 🔸 গত ৫ জুলাই: বুলিয়াপাড়া এলাকায় এক ব্যক্তির বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায় সাজ্জাদ ও তার সহযোগীরা। 🔸 ২৭ অক্টোবর: চান্দগাঁও হাজীরপুল এলাকায় এক ঠিকাদারের বাসায় চাঁদা দাবি করে গুলি চালায় সে। এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ৫০ হাজার টাকা দিতে না চাওয়ায় তার বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করে সাজ্জাদ। এসব ঘটনায় থানায় একাধিক মামলা হয়েছে। সন্ত্রাসী বাহিনীর কার্যক্রম সাজ্জাদ সাধারণত ১৫-২০ জনের একটি বাহিনী নিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী তৎপরতা চালায়। তারা ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে। প্রশ্ন হলো, কবে হবে সাজ্জাদের বিচার? নগরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া এই সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে আইনের ফাঁকফোকর গলে বেরিয়ে যাচ্ছে। একাধিকবার গ্রেপ্তার হলেও সে জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও অপরাধের জগতে ফিরে যায়। চট্টগ্রামবাসীর এখন একটাই দাবি— এই ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। পুলিশ প্রশাসন কি এবার তাকে পাকড়াও করতে পারবে? নাকি সে আবারও আইনের ফাঁক গলে পালিয়ে যাবে?
Hiçbir yorum bulunamadı