close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

এপ্রিল মাসে নির্বাচন ‘একেবারেই অযৌক্তিক’: আমীর খসরু

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এপ্রিল মাসে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনকে ‘সম্পূর্ণ অবান্তর’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি দাবি করেন, এই প্রস্তাব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বাস্তবতার সঙ্গে একেবারে সাংঘর্ষি..

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জ্যেষ্ঠ নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এপ্রিল মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাবকে ‘একেবারেই অযৌক্তিক, অবাস্তব এবং ষড়যন্ত্রমূলক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি মনে করেন, এই সময়ে নির্বাচন আয়োজন বাস্তবতা, জনমানস এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতির পরিপন্থী।

সোমবার চট্টগ্রামে এক জনসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে আমীর খসরু বলেন,

 

রমজান সংযমের মাস। মুসলমানরা এ সময় আত্মসংযমে মনোনিবেশ করেন—রোজা, নামাজ, ইবাদত, তিলাওয়াতে ব্যস্ত থাকেন। এর মাঝে নির্বাচন আয়োজন এক ধরনের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত। শুধু তাই নয়, এপ্রিল মাস ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকির মাস হিসেবেও পরিচিত। একই সঙ্গে দেশের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তখন বার্ষিক বা সেমিস্টার পরীক্ষা চলে। এই সমস্ত দিক বিবেচনা করেই বলছি, এপ্রিল মাসে নির্বাচন সম্পূর্ণ অবাস্তব চিন্তা।”

 

 

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস, সামাজিক বাস্তবতা এবং আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। এটাই সর্বাধিক উপযুক্ত সময়। প্রয়োজনে আগস্ট বা সেপ্টেম্বরেও নির্বাচন হতে পারে। কিন্তু ডিসেম্বর পার হয়ে এপ্রিল পর্যন্ত গড়ানো মানেই জনমতের বিরুদ্ধে একটি সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া।”

নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি অভিযোগ করে বলেন,

 

আজ জনগণের মধ্যে প্রশ্ন—এই এপ্রিলে নির্বাচন কারা চায়? কার স্বার্থে এই সময় নির্বাচন আয়োজনের তৎপরতা চলছে? যে বা যারা এই সময় নির্বাচন চায়, তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। নির্বাচনী স্বার্থ রক্ষা এবং ক্ষমতা ধরে রাখার নোংরা রাজনীতির অংশ হিসেবেই এটি দেখছে সাধারণ মানুষ।”

আমীর খসরু আরও দাবি করেন, বর্তমান সরকারের অধীনে ‘নিরপেক্ষ, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য’ নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়।

 

যদি সেই গোষ্ঠীর স্বার্থ অক্ষুণ্ন থাকে, তাহলে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী নিজের মতো করে নির্বাচন সাজাবে—এটাই জনমতের বাস্তব অভিব্যক্তি। আমরা এর বিরুদ্ধে আছি এবং থাকব,”—বলেন তিনি।

এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলেন তিনি,

 

আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবো। আমাদের দাবি একটাই—একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হোক।”

 

বাংলাদেশে সাধারণত ডিসেম্বর মাসকে নির্বাচন আয়োজনের জন্য উপযুক্ত সময় হিসেবে ধরা হয়। আবহাওয়াগত সুবিধা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান না থাকা এবং শিক্ষাব্যবস্থার চাপহীনতা এই সময়কে নির্বাচন উপযোগী করে তোলে। এপ্রিল মাসে রোজা, প্রচণ্ড গরম, ঘূর্ণিঝড় এবং পরীক্ষার চাপ সব মিলিয়ে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনকে অত্যন্ত জটিল ও অযৌক্তিক করে তোলে।

তবে নির্বাচন কমিশন যদি এই সময় নির্বাচন আয়োজনের কথা ভাবছে, তাহলে এটি সরকারের রাজনৈতিক কৌশলেরই অংশ বলে ধারণা করছেন বিএনপি নেতারা।

 

এপ্রিল মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তাব ইতোমধ্যে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। বিএনপি এই প্রস্তাবকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে মনে করছে, যেখানে ধর্মীয়, সামাজিক ও প্রাকৃতিক বাস্তবতা উপেক্ষিত হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে নির্বাচন আয়োজন হলে তা কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Tidak ada komentar yang ditemukan


News Card Generator