জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) প্রস্তাব থেকে সরে এসে নতুন ধারায় এগোচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এনসিসির প্রস্তাবিত কাঠামোর পরিবর্তে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি বিশেষ কমিটি’ গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ পরিবর্তন ঘোষণার দায়িত্ব নিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে এই তথ্য তুলে ধরা হয়। বৈঠকে আলী রীয়াজ জানান, রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে নতুন কমিটির অংশ করা হবে না। এর পরিবর্তে কমিটিতে উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের স্পিকারকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এনসিসির প্রস্তাব থেকে সরে এসেছে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে গুরুত্ব দিয়েছি। নতুন কমিটির কাঠামো সেই মত বদলানো হয়েছে।’
এনসিসির প্রাথমিক প্রস্তাবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে কমিটির সদস্য করা হয়েছিলো। কিন্তু নতুন প্রস্তাবে এই দুই গুরুত্বপূর্ণ পদ রেখে দেয়া হয়নি। নতুন কমিটির কাজ শুধু সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়া তদারকি করা। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল এবং তিন বাহিনীর প্রধানের নিয়োগ নতুন কমিটির দায়িত্বভুক্ত হবে না।
কমিটির সদস্য সংখ্যা হবে সাত, যেখানে কমিটির সভাপতি হবেন নিম্নকক্ষের স্পিকার। এই প্রস্তাবিত কমিটি নিয়োগের বিষয়গুলোতে বিশেষ মনোযোগ দেবে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও ঐকমত্য নিশ্চিত করবে।
আলী রীয়াজ আরো বলেন, ‘এই নতুন কাঠামোর মাধ্যমে আমরা রাজনৈতিক দলগুলো এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষের মধ্যে ঐকমত্য তৈরি করার চেষ্টা করছি। এটা দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নে সহায়ক হবে।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই প্রস্তাব আজকের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হচ্ছে। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলো নতুন এই কাঠামোর ওপর মতামত জানাবে এবং প্রস্তাবিত কমিটির কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করবে।
নতুন এই ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নিয়োগ কমিটি’ দেশের সংবিধান ও প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা রক্ষায় নতুন দিক নির্দেশনা দেয়ার প্রত্যাশা জাগিয়েছে। এই উদ্যোগ স্বরাষ্ট্র, বিচার বিভাগসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতের নিয়োগ প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আগামীদিনে এই কমিটি কতটা কার্যকরী হবে এবং রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য কতটা গড়ে উঠবে—এগুলো দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিবেশের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করবে।



















