close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

এনসিপির যুব উইং ‘জাতীয় যুবশক্তি’র আত্মপ্রকাশ, ঘোষণাপত্রে যা বলা আছে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
‘৭১ এর আত্মত্যাগ থেকে শুরু করে ২০২৪-এর ছাত্র অভ্যুত্থান—সবকিছুর ধারাবাহিকতায় আত্মপ্রকাশ করলো জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব প্ল্যাটফর্ম ‘জাতীয় যুবশক্তি’। নতুন সংবিধান ও রাষ্ট্র কাঠামোর আহ্বান জানিয়..

জাতীয় যুবশক্তির আগমন: তারুণ্যের কণ্ঠে নতুন বাংলাদেশ গড়ার শপথ

ঢাকা, ১৬ মে
“আমরাই আগামী”—এই সাহসী আহ্বানকে সামনে রেখে আজ রাজধানীর গুলিস্তানে আবরার ফাহাদ অ্যাভিনিউয়ে আত্মপ্রকাশ করলো জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তি’। তরুণদের নেতৃত্বে একটি নতুন রাষ্ট্র কাঠামো, নতুন রাজনৈতিক দিশা এবং সর্বজনীন মর্যাদার স্বপ্ন নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হলো সংগঠনটির আহ্বায়ক কমিটি ও রাজনৈতিক লক্ষ্য।

আয়োজনে ১৩১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে অ্যাডভোকেট মো. তরিকুল ইসলামকে আহ্বায়ক, ডা. জাহিদুল ইসলামকে সদস্য সচিব এবং ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ সোহেলকে মুখ্য সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ঘোষণাপত্রে তরুণদের অগ্রণী ভূমিকায় নতুন রাষ্ট্রের স্বপ্ন

‘জাতীয় যুবশক্তি’র ঘোষণাপত্রে বলা হয়, “ইতিহাসের প্রতিটি মৌলিক পরিবর্তনে তরুণেরাই নেতৃত্ব দিয়েছে। এখন সময় এসেছে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের, নতুন প্রজাতন্ত্র নির্মাণের।”
তারা স্পষ্টভাবে জানায়, ২০২৪-এর ছাত্র অভ্যুত্থান শুধুই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং এটি নতুন রাষ্ট্রকল্পের জন্মমুহূর্ত।

আত্মত্যাগের চেতনায় আগামীর সংগ্রাম

ঘোষণাপত্রে শ্রদ্ধা জানানো হয় ১৯৪৭-এর উপনিবেশবিরোধী আন্দোলন, ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪-এর ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের শহিদ ও আহতদের প্রতি। তারা বলে, “এই ধারাবাহিক লড়াইয়ের ফলশ্রুতিতেই আজকের যুবশক্তি। আমরা এই ইতিহাসকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে চাই।”

নতুন সংবিধান ও রাষ্ট্র কাঠামোর দাবি

ঘোষণাপত্রের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অংশ হলো—একটি নতুন সংবিধান এবং রাজনৈতিক চুক্তির দাবি। সেখানে বলা হয়, “আমরা এমন একটি গণতান্ত্রিক কাঠামো চাই, যা কেবল ভোটে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং প্রতিটি রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে।”

তারা আরও উল্লেখ করে—নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা, দলনিরপেক্ষ বিচার বিভাগ, ক্ষমতাসম্পন্ন স্থানীয় সরকার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর জবাবদিহিমূলক প্রশাসনই হবে আগামীর বাংলাদেশের মূল ভিত্তি।

'বাংলাদেশপন্থা' রাজনৈতিক দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু

‘জাতীয় যুবশক্তি’ তাদের রাজনৈতিক দর্শনকে ‘বাংলাদেশপন্থা’ হিসেবে ব্যাখ্যা করে বলেছে, এটি একটি ফ্যাসিবাদবিরোধী, আগ্রাসনবিরোধী এবং সার্বভৌম রাষ্ট্রচিন্তা—যা কেবল বিদেশি শক্তির ছায়ায় নয়, বরং বাংলাদেশের ইতিহাস, ভূগোল, সংস্কৃতি ও মানুষের সংগ্রাম থেকে উৎসারিত।

বদ্বীপীয় সভ্যতায় নেতৃত্বের স্বপ্ন

ঘোষণাপত্রে বলা হয়, “বাংলাদেশ একটি বদ্বীপীয় সভ্যতা—যার ভৌগোলিক, ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য আমাদের শক্তি। বঙ্গোপসাগর কেন্দ্রিক অঞ্চলে কৌশলগত নেতৃত্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চাইলে প্রয়োজন রাষ্ট্রের সভ্যতাগত রূপান্তর।”

সমতার অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি

‘জাতীয় যুবশক্তি’ জানায়, “আমরা এমন একটি অর্থনীতি চাই, যেখানে কেবল প্রবৃদ্ধির হিসাব থাকবে না, থাকবে ইনসাফ, সমতা, এবং কর্মসংস্থান। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তি সবার নাগালে থাকবে। দুর্নীতিমুক্ত ও মেধাভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে আমরা কাজ করবো।”

রাষ্ট্রে তরুণদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার শপথ

তারা আরও বলে, “আমরা সেই প্রজন্ম যারা ’৪৭ এর আজাদির আত্মা বহন করি, ’৭১ এর সংগ্রামে অনুপ্রাণিত এবং ২০২৪ এর অঙ্গীকারে শপথবদ্ধ। তরুণদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করাই হবে ‘জাতীয় যুবশক্তি’র অন্যতম অঙ্গীকার।”

নতুন রাজনৈতিক চুক্তির মাধ্যমে ভবিষ্যতের পথচলা

ঘোষণাপত্রে শেষে বলা হয়, “এখন সময় এসেছে এমন একটি সংবিধান ও রাজনৈতিক চুক্তির, যা বর্তমান প্রজন্মকে প্রতিনিধিত্ব করবে, প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবে এবং জনগণের মর্যাদা ও সুযোগ নিশ্চিত করবে।”


 

জাতীয় যুবশক্তির আত্মপ্রকাশ কেবল একটি রাজনৈতিক সংগঠনের ঘোষণাই নয়, এটি তরুণ প্রজন্মের দীর্ঘ লড়াই, স্বপ্ন এবং ভবিষ্যতের পথে এক দৃপ্ত পদক্ষেপ। একটি নতুন রাষ্ট্র, নতুন প্রজাতন্ত্র, এবং নতুন নেতৃত্বের আহ্বান জানিয়ে তারা বলছে—“আমরাই আগামী”।

کوئی تبصرہ نہیں ملا