গত শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকালে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক কার্যকরী অভিযান চালিয়ে ইরানের ছোড়া ৪০টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বরাতে দেশটির প্রধান সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অব ইসরায়েল’ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
শুক্রবার ২০ জুন রাত থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী নজরদারির মাধ্যমে শত্রু পক্ষের ড্রোনগুলো শনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, ড্রোনগুলোর মধ্যে একটি বেইত শে’আন শহরের এক বসতবাড়িতে আঘাত হানে, যেখানে অন্যান্যগুলো দক্ষিণাঞ্চলের একটি মহাসড়কের পাশে খোলা এলাকায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবারের এই অভিযানের মাধ্যমে তারা ইরানের ট্রাক-মাউন্টেড একটি ড্রোন লঞ্চারকেও ভূপাতিত করেছে। এই অভিযান একদিনে ইসরায়েলের জন্য বিরাট সাফল্যের ইঙ্গিত বহন করে।
আইডিএফের মতে, শুধুমাত্র আজকের আক্রমণ বাদ দিলে, গত ১৩ জুন থেকে তারা মোট ৪৭০টি ইরানি ড্রোন ধ্বংস করেছে, যা প্রায় ৯৯ শতাংশ সফলতা নির্দেশ করে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইরান ইসরায়েলে নিয়মিত ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। আইডিএফের তথ্য অনুযায়ী, ১৩ জুন থেকে এখন পর্যন্ত ইরান ১০০০টিরও বেশি ড্রোন ছুড়েছে, তবে তাদের অধিকাংশই ব্যর্থ হয়েছে বা পাশের জর্ডানসহ অন্যান্য দেশের আকাশসীমায় ধ্বংস হয়েছে।
এই ড্রোন আক্রমণ ও প্রতিরোধের ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যের জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করেছে। ইসরায়েল তার আকাশসীমার নিরাপত্তা জোরদার করতে বাধ্য হয়েছে। এর ফলে সম্ভাব্য সামরিক সংঘর্ষের আশঙ্কা বেড়েছে।
অনেকে মনে করছেন, ইরানের এই ড্রোন হামলা কৌশল মধ্যপ্রাচ্যে শক্তির ভারসাম্য বদলে দিতে পারে। অন্যদিকে, ইসরায়েল তাদের রক্ষাকবচ আরও উন্নত করছে যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের হামলা ঠেকানো যায়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক এই উত্তেজনার জের ধরে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষ তীব্রতর হতে পারে। বিশেষ করে ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার যেভাবে বাড়ছে, তাতে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক মহল মধ্যপ্রাচ্যের এই উত্তেজনা কমানোর জন্য কূটনৈতিক উদ্যোগ বাড়াচ্ছে, কিন্তু সংঘাতের ঝুঁকি এখনও থেকেই গেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ৪০টি ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রতি বিশ্ববাসীর নজর কাড়েছে। সামরিক কৌশল, প্রযুক্তির ব্যবহার ও রাজনৈতিক উত্তেজনার এক জটিল মিশ্রণে আগামী দিনগুলো মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তার নতুন অধ্যায় শুরু হতে পারে।