close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

এবার চীনের পরমাণু অস্ত্র নিয়ে উত্তেজনা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার পারমাণবিক সংঘাতের উত্তাপ যখন বিশ্বকে শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে, ঠিক তখনই চীন তার পরমাণু অস্ত্রভান্ডার বাড়িয়ে বৈশ্বিক উত্তেজনা আরও তীব্র করে তুলেছে। ৬০০ বোমার ছায়ায় দাঁড়িয়ে আজ বিশ্ব আ..

বিশ্ব আবারও পারমাণবিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। দীর্ঘদিন ধরে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে ‘প্রাণঘাতী হুমকি’ হিসেবে বিবেচনা করে আসছিল ইসরায়েল। আর এবার সেই উদ্বেগকে বাস্তবে রূপ দিয়ে ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে একটি বড়সড় সামরিক অভিযানে ইরানের পরমাণু অবকাঠামোর উপর সরাসরি হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই অভিযান ছিল একটি "সুনির্দিষ্ট এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ" — যার মূল উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস করা, যাতে ভবিষ্যতে তা ইসরায়েলের জন্য অস্তিত্বগত হুমকি হয়ে না দাঁড়ায়।

এই অভিযানে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনাগুলো— বিশেষ করে নাতানজ, ইসফাহান এবং ফরদোর কেন্দ্রগুলোকে নিশানা করা হয়। উপগ্রহ চিত্র এবং সামরিক বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, অন্তত দুটি স্থাপনায় উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। তবে এসব কেন্দ্রের অনেকটাই ভূপৃষ্ঠের গভীরে অবস্থিত হওয়ায়, প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো পুরোপুরি নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।

ইসরায়েলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হামলার ফলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে 'গুরুতর ধাক্কা' লেগেছে। কিন্তু ইরান এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তারা "কোনো বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি" এবং তাদের পরমাণু গবেষণা অব্যাহত থাকবে।

দ্বিতীয় পৃষ্ঠা: পাল্টা আঘাতে ইরান এবং চীনের অনিশ্চয়তাময় পদক্ষেপ

ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানও চুপ করে বসে থাকেনি। তেলআবিবসহ বিভিন্ন শহরের দিকে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে দেশটি। এই পাল্টা অভিযানকে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ নামে অভিহিত করেছে ইরান। সামরিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্য যেন আবার এক ভয়ঙ্কর সংঘাতের আগুনে পুড়তে শুরু করেছে।

ঠিক এই পরিস্থিতিতে নতুন করে উত্তেজনার আগুনে ঘি ঢেলেছে আরেক পরমাণু শক্তিধর দেশ— চীন। সাম্প্রতিক এক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ রিপোর্টে বলা হয়েছে, চীন বর্তমানে যে হারে তার পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার বাড়াচ্ছে, তা বিশ্বের যেকোনো পারমাণবিক রাষ্ট্রের তুলনায় দ্রুত। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৫ সালের শুরুর দিকেই বেইজিংয়ের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়ে যাবে। এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক কৌশলগত ভারসাম্যের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন অবশ্য দাবি করেছেন, চীনের পরমাণু নীতির মূল ভিত্তি আত্মরক্ষা। তিনি বলেন, “চীন কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতায় জড়ায় না এবং বিশ্বের একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে আমরা পারমাণবিক অস্ত্র কখনোই প্রথমে ব্যবহারের পক্ষে না।”

তিনি আরও যোগ করেন, “বেইজিং দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ— নিজেদের বৈধ নিরাপত্তার স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি বিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য।”

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের আগুনে চীনের এই নতুন অবস্থান এবং বৃদ্ধি পাওয়া পারমাণবিক ক্ষমতা পুরো বিশ্বকে এক নতুন স্নায়ুযুদ্ধের ভয়াবহ সম্ভাবনার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এশিয়া থেকে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ থেকে আমেরিকা— সবাই এখন চীনের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে।

বিশ্বের নেতাদের কাছে এখন প্রশ্ন একটাই— আরেকটি বিশ্বযুদ্ধের পূর্বসূচনা কি হয়ে গেল?

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি


News Card Generator