টেস্ট সিরিজে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় কলম্বোতে ব্যাট হাতে নেমেছে বাংলাদেশ দল। প্রথম ম্যাচের পরিকল্পনায় ভুল ও সুযোগ নষ্টের হতাশা নিয়ে গল টেস্ট থেকে ফিরে আসা দলটি দ্বিতীয় টেস্টে নতুন কিছু করতে চায়, সেটাই স্পষ্ট করলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। টস ভাগ্য এবারও বাংলাদেশের পক্ষে, আর শান্ত কোনো দ্বিধা না করেই ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রথম ম্যাচে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বাইরে থাকা মেহেদি হাসান মিরাজ ফিরেছেন একাদশে। তিনি নিজেকে পুরোপুরি সুস্থ প্রমাণ করেছেন আগের দিন অনুশীলনেই। তার অন্তর্ভুক্তিতে দল একটু ভারসাম্য ফিরে পেয়েছে। মিরাজের জায়গা করে দিতে বাদ পড়েছেন জাকের আলী অনিক। একইসাথে ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন পেসার হাসান মাহমুদ।
বাংলাদেশ দলে এই দুই পরিবর্তন কিছুটা প্রত্যাশিতই ছিল। তবে বড় দুশ্চিন্তার জায়গা হচ্ছে পেস অ্যাটাকের ধার। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বোলাররা একদমই সুবিধা করতে পারেননি। এমন পরিস্থিতিতে স্পিন-নির্ভর পরিকল্পনা কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়েও আছে প্রশ্ন। তবে শান্তর চোখে এটি এক “নতুন সূচনা”। ম্যাচ শুরুর আগে সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “আমরা জানি আমাদের ভুল কোথায় হয়েছে। এবার সেখান থেকে শেখা আর ঘুরে দাঁড়ানোই লক্ষ্য।”
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার একাদশেও এসেছে নিশ্চিত দুটি পরিবর্তন। অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ক্যারিয়ারের ইতি ঘটেছে গলেই। তার স্থানে সুযোগ পেয়েছেন তরুণ সোনাল দিনুশা। ম্যাচ শুরুর আগে তার হাতে টেস্ট ক্যাপ তুলে দেন কুশাল মেন্ডিস, যা শ্রীলঙ্কা শিবিরে বিশেষ আবেগের মুহূর্ত তৈরি করে। দিনুশা থাকবেন ব্যাটিংয়ের ছয় নম্বর পজিশনে।
আর ইনজুরির কারণে বাদ পড়েছেন মিলান রত্নায়েকে। তার বদলি হিসেবে এসেছেন বিশ্ব ফার্নান্দো, যিনি পেস আক্রমণে বাড়তি শক্তি যোগ করবেন। এটা থেকেই স্পষ্ট, শ্রীলঙ্কা কলম্বোর এই উইকেটে পেসারদের নিয়ে এগোতে চায়।
গলে পিচে বাড়তি স্পিন সহায়তা থাকলেও কলম্বোর উইকেট এবার কিছুটা ব্যাটসম্যানদের পক্ষে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। শান্তর ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত তাই খুব একটা অপ্রত্যাশিত নয়। তবে ব্যাটসম্যানদের শুরু থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। শুরুতে ভালো ভিত গড়তে না পারলে আবারও ভোগান্তি বাড়বে সফরকারীদের জন্য।
বাংলাদেশের জন্য এই ম্যাচ শুধু সিরিজ বাঁচানোর লড়াই নয়, বরং দলের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনারও পরীক্ষা। শান্ত-মিরাজরা এবার নিজেদের প্রমাণ করতে কতটা প্রস্তুত, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
সিরিজে ১-০ তে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ যদি এই ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে চায়, তাহলে তাদের তিন বিভাগেই নির্ভুল ক্রিকেট খেলতে হবে। বিশেষ করে বোলিং ইউনিটকে হতে হবে আরও কার্যকর। সেইসাথে সিনিয়র ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে বড় ইনিংসই হতে পারে ম্যাচের পার্থক্য গড়ার মূল চাবিকাঠি।