close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

দ্রুত নির্বাচনের দিকেই এগোচ্ছে সরকার

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে, কীভাবে হবে, তা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইঙ্গিত দিলেন দ্রুত নির্বা
দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে, কীভাবে হবে, তা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইঙ্গিত দিলেন দ্রুত নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন একটি জাতির গণতান্ত্রিক হয়ে ওঠার জন্য অপরিহার্য। যত দ্রুত সম্ভব, এ বছরের শেষ দিকে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে পারে।’ জাপানের সরকারি টেলিভিশন এনএইচকেকে গত বুধবার দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা জানান। নির্বাচনের সময় নিয়ে নতুন ইঙ্গিত এর আগে বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় উল্লেখ করেন। তিনি জানান, চলতি বছরের শেষ দিক কিংবা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে নির্বাচন হতে পারে। তবে গত ১৬ ডিসেম্বর তাঁর বক্তব্যের পরদিন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচন ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে হতে পারে। কিন্তু এনএইচকেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা এবার ২০২৬ সালের প্রথমার্ধ থেকে সরে এসে ২০২৫ সালের শেষ দিকের নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন, যা নতুন আলোচনা তৈরি করেছে। নির্বাচনী প্রস্তুতিতে ব্যস্ত নির্বাচন কমিশন প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পরপরই নির্বাচন কমিশন জানায়, তারা জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের জন্য কমিশন পুরোপুরি প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার যখন চাইবে, তখনই নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।’ নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এর মধ্যে রয়েছে: ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা। নির্বাচনী আসনগুলোর সীমানা পুনর্নির্ধারণ। নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন। পর্যবেক্ষক নীতিমালা প্রণয়ন। ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ। এসব কাজ সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনকে যথেষ্ট সময় দিতে হবে। তবে সরকার দ্রুত নির্বাচন করতে চাইলে কমিশনকে সময়ের ব্যবধান কমিয়ে কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎকারের দিন রাতেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ দেখা যায়। পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নানা ধরনের ক্ষোভপ্রকাশ করতে দেখা গেছে জনগণকে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় শেখ হাসিনার নাম সংবলিত স্থাপনা, মূর্তি ও নামফলক ভেঙে ফেলার মতো ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। বিএনপির প্রতিক্রিয়া ও দাবি এই পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পলাতক স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও তাঁর দোসরদের আইনের আওতায় আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। ফলে জনগণ নিজের হাতে আইন তুলে নিচ্ছে, যা সরকারের জন্য ভালো বার্তা নয়।’ বিএনপির মতে, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন আয়োজন করাই এখন সরকারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সংস্কার ও নির্বাচন: কোনটি আগে? নির্বাচনের আগে সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো দ্রুত নির্বাচন চায়, কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ কিছু দল রাষ্ট্র সংস্কার আগে শেষ করার পক্ষে। এদিকে জামায়াতে ইসলামী ইতিমধ্যেই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে এবং বিভিন্ন এলাকায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করছে। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘দলীয় প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আমরা যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করছি।’ নতুন রাজনৈতিক দলের উত্থান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা করছেন। তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এই দলের আহ্বায়ক হচ্ছেন বলে জানা গেছে। তবে দলের নাম ও শীর্ষ নেতৃত্ব সম্পর্কে এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। আইন সংস্কারের অপেক্ষায় নির্বাচন কমিশন নির্বাচন কমিশন বলছে, নির্বাচন আয়োজনের আগে বেশ কিছু আইনগত সংস্কার প্রয়োজন। এতে আরও পাঁচ-ছয় মাস সময় লাগতে পারে। ফলে অক্টোবরের মধ্যে এসব কাজ সম্পন্ন না হলে ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজন করা কঠিন হয়ে পড়বে। ফ্যাসিস্টদের বিচার এখনো অসম্পন্ন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন গড়ে ওঠে, তা এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার এখনও সম্পন্ন হয়নি। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, তা নির্ভর করছে ট্রাইব্যুনালের রায়ের ওপর। নির্বাচন কোন পথে? নির্বাচনের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশ্লেষকরা এখনও অনিশ্চিত। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শুধু শুনছি নির্বাচন হবে, কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো সময় জানানো হয়নি। সংস্কারের মাত্রা ও ধরনও অজানা। ফলে জনগণ অন্ধকারে রয়েছে।’ সব মিলিয়ে, দ্রুত নির্বাচন করার বিষয়ে সরকারের দিক থেকে ইতিবাচক বার্তা এলেও বাস্তবে তা কবে নাগাদ হবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে চলতি বছরের শেষ দিকেই নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা ক্রমেই বাড়ছে।
لم يتم العثور على تعليقات


News Card Generator