বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন সরাসরি সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, “দেশবাসীর অন্তরের ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন। এখনো সময় আছে সম্মানের সঙ্গে বিদায় নেওয়ার।”
শনিবার (৩১ মে) ঢাকা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তিনি। এ অনুষ্ঠানে ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকীতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করা হয়।
তিনি বলেন, “সরকার ১০ মাস সময় নষ্ট করেছে। অথচ এই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব। আমাদের নেতা স্পষ্ট করে বলেছেন—ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে। এটা কোনো কঠিন সংস্কার নয়। বরং দেশের শান্তি-স্থিতির জন্য এটাই একমাত্র রাস্তা।”
তিনি আরও বলেন, “ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সঙ্গে বিদায় নিন। আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব। জনগণ আর সময় নষ্ট সহ্য করবে না।”
জিয়াউর রহমানের অবদান স্মরণ করে জয়নুল আবেদীন বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকার একসময় চেয়েছিল জিয়াউর রহমানের নাম, ইতিহাস—সবকিছু মানুষের মন থেকে মুছে ফেলতে। কিন্তু তা পারেনি। কারণ, জিয়া ছিলেন দেশের প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষক, যিনি যুদ্ধ করেছেন, দেশকে ভালোবেসেছেন, এবং তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের পথে নিয়ে গেছেন।”
তিনি বলেন, “এই কারণেই জিয়াউর রহমান আজও মানুষের হৃদয়ে, স্মৃতিতে জাগরুক। এমন একজন নেতাকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যায় না। আজ তাঁর স্মৃতি, আদর্শ ও সাহসের পথ ধরেই এগিয়ে চলেছে বিএনপি।”
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তাকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল সরকার। কিন্তু পারেনি। আল্লাহর রহমতে তিনি আগের চেয়ে এখন অনেকটা ভালো আছেন। আর তারেক রহমান হাজার মাইল দূরে থেকেও দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন। তিনি গণতন্ত্রের জন্য নিরলস লড়াই করে যাচ্ছেন—যেমনটা অতীতেও করেছেন, ভবিষ্যতেও করবেন।”
অনুষ্ঠানের শুরুতে সকাল ৯টায় ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা সন্তানদের নিয়ে উপস্থিত হন। সেখানে শিশুদের জন্য রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
এই আয়োজনে আইনজীবীদের পরিবারসহ অনেকে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক।
উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি মহসিন মিয়া, সহসভাপতি শহীদুজ্জামান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হোসেন আলী খান হাসান, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ঢাকা বার ইউনিটের সদস্যসচিব নিহার হোসেন ফারুক, ট্রেজারার আব্দুর রশীদ মোল্লা, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নূরজাহান বেগম বিউটি, লাইব্রেরি সম্পাদক নার্গিস পারভীন মুক্তি ও ফোরামের কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক মো. ইলতুৎমিশ সওদাগর এ্যানি প্রমুখ।
ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়ার স্পষ্ট বার্তা দিয়ে বিএনপি সরকারের সামনে এক কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরেছে। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—সম্মানের সঙ্গে বিদায় নেওয়ার সময় এখনই। না হলে রাজপথেই হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।