close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ডিসেম্বরে নয়, আগে চাই বিচার ও সংস্কার — নির্বাচনের আগে কড়া বার্তা জামায়াত নেতার..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান সরাসরি জানিয়ে দিলেন—ডিসেম্বরে কোনো নির্বাচন নয়। আগে চাই দুর্নীতির বিচার, রাষ্ট্রের সংস্কার। এই দাবিকে ঘিরেই দেশের রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে নতুন উত্তেজনা।..

‘ডিসেম্বরে নির্বাচন মানি না, আগে চাই বিচার ও রাষ্ট্রীয় সংস্কার’—জামায়াতের নায়েবে আমিরের কড়া বার্তা

বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের বক্তব্য। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, "যারা ডিসেম্বরের মধ্যে যেনতেনভাবে নির্বাচন চায়, তাদের সঙ্গে জামায়াত একমত নয়।"

আজ শনিবার দুপুরে একটি বিশাল কর্মী সম্মেলনে, জেলা শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে এই বক্তব্য দেন তিনি। জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা বলেন, “আমরা সবার আগে চাই দুর্নীতিবাজ, জুলুমবাজ এবং গণহত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করা হোক। একে ঘিরেই আমাদের অবস্থান—আগে বিচার, তারপর রাষ্ট্রীয় সংস্কার এবং সবশেষে নির্বাচন।”

আওয়ামী লীগকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ

বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেন মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ শুধু দেশের নির্বাচনব্যবস্থা নয়, বরং বিচারব্যবস্থা, প্রশাসনসহ রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। ২০১৪ সালে তারা বিনাভোটে ক্ষমতায় এসেছে। ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতেই সম্পন্ন করেছে। আর ২০২৪ সালের নির্বাচনে নিজেরাই নিজেদের নির্বাচিত করেছে—ডামি প্রার্থীদের মাধ্যমে।”

তার মতে, “আরেকবার এমন প্রহসনের নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। বাংলাদেশের মানুষ একটি বাস্তব, স্বচ্ছ এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো নির্বাচন চায়।”

ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি ও কোরআনের আলো

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, “জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে, ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থাই পারে দেশকে কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে পরিণত করতে। আমরা ঘরে ঘরে কোরআনের আলো ছড়িয়ে দিতে চাই। চাই জাতীয় সংসদে কোরআনের আইন চালু করতে।”

তিনি আরো বলেন, “মদিনার আদলে আমরা দেশকে গড়তে চাই। রাসুল (সা.) যেভাবে মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, আমরাও সেই পথেই হাঁটতে চাই। আমাদের বিশ্বাস—কোরআনের আইনের বাইরে শান্তি সম্ভব নয়। এই আইন প্রতিষ্ঠিত হলে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ শান্তি ও নিরাপত্তা পাবে।”

জামায়াতের অবস্থান—‘এটা ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের চক্রান্ত’

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে যেনতেন নির্বাচন আমরা মেনে নেব না। আগে দরকার বিচার ও সংস্কারের দৃশ্যমান অগ্রগতি। তারপর নির্বাচন।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “যারা ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়, তারা মূলত গণহত্যার বিচারকে পিছিয়ে দিতে চায়। তাদের বক্তব্য ভারতের সুরে মিলে যাচ্ছে। এটা একটি ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের চক্রান্ত, যা জামায়াতে ইসলামী হতে দেবে না।”

ছয় আসনে প্রার্থী ঘোষণা

সম্মেলনের শেষ দিকে জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। পরে মঞ্চে দাঁড় করিয়ে তাদের পরিচয় করিয়ে দেন মুজিবুর রহমান। উপস্থিত কর্মীদের মধ্যে ছিল উৎসাহ, নতুন প্রত্যাশা এবং পরিবর্তনের স্বপ্ন।

জামায়াতে ইসলামীর এই অবস্থান দেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে। যেখানে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে, জামায়াত বলছে—আগে বিচার, পরে নির্বাচন। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের ভিন্ন অবস্থান স্পষ্ট করে তুলেছে।

No comments found