বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফের উত্তাপ ছড়াল। একটি বড় রাজনৈতিক দল ডিসেম্বর মাসেই নির্বাচন চায়—এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ফখরুদ্দিন আহমদ ইউনূস। রোববার বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এই ইঙ্গিত দেন।
তিনি বলেন, “বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়—এমনটাই বোঝাতে চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।"
এই মন্তব্যের পর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সামনের জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত হতে পারে। বিশেষত, এমন সময়ে এই বক্তব্য এসেছে, যখন সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান সংলাপ দ্বিতীয় দফায় প্রবেশ করতে যাচ্ছে।
জুলাই সনদ সামনে—আলোচনার দ্বিতীয় ধাপ শুরু সোমবার
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপ-প্রেস সচিব আরও জানান, আগামীকাল সোমবার (২ জুন) ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংস্কার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফার আলোচনা শুরু হচ্ছে। আলোচনার সূচনা করবেন স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, “এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা শেষে আমরা হয়তো জুলাই সনদ নিয়ে একটি সুস্পষ্ট ঘোষণা পেতে পারি। এটি রাজনৈতিক অচলাবস্থার একটি সম্ভাব্য সমাধান হতে পারে।”
জাপানের সমর্থন নিশ্চিত—বিশ্বমঞ্চেও অগ্রগতি
একই অনুষ্ঠানে প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে একটি অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা যে ধরনের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক আশ্বাস চাইছিলাম, তা আমরা পেয়েছি। জাপান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছে।”
এছাড়াও তিনি জানান, “মহেশখালী ও মাতারবাড়ী প্রকল্প নিয়ে সরকারের যেসব মাস্টারপ্ল্যান রয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নে জাপান তাদের সর্বাত্মক সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।”
রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন
এই দুই স্তরের বক্তব্য—একদিকে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নির্বাচন নিয়ে ইঙ্গিত, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমর্থনের বার্তা—বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে করেছে আরও গতিময়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রধান উপদেষ্টার এই ধরনের বক্তব্য রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করবে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। একইসঙ্গে এটি নির্বাচনের সময়সূচি ও রাজনৈতিক সমঝোতার পথে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলেছে।ডিসেম্বরেই যদি নির্বাচন হয়—তবে তার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে এখন থেকেই। রাজনৈতিক দলগুলো কি নিজেদের মতপার্থক্য ভুলে আলোচনার টেবিলে বসে সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে, নাকি আবারও অচলাবস্থা ঘনীভূত হবে—তা জানার জন্য চোখ রাখতে হবে আগামীকাল শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় দফার আলোচনার দিকে।



















