close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

দিনে ৩০ পান খাওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে যা বললেন পূজা চেরী

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঈদে মুক্তি পাচ্ছে পূজা চেরীর ‘টগর’। এই সিনেমার চরিত্রে ডুবে যেতে দিনে ৩০টি পান খাওয়ার অভিজ্ঞতা, লিপস্টিক থেকে ‘টগর’—সব কিছু নিয়েই খোলামেলা কথা বললেন অভিনেত্রী।..

ঢালিউডের পর্দাজুড়ে নতুন আলো ফেলতে প্রস্তুত অভিনেত্রী পূজা চেরী। এবারের ঈদে মুক্তি পাচ্ছে তার অভিনীত সিনেমা ‘টগর’, যা ইতিমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এই সিনেমার টিজার প্রকাশিত হয়েছে ১ জুন, রোববার। সিনেমার প্রচারে অংশ নিতে গিয়ে এক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভিন্ন এক পূজাকে পাওয়া গেল—যেখানে তিনি কথা বলেছেন তার চরিত্র, প্রস্তুতি, শিল্পীসত্তা এবং নিজের জীবনের কিছু গভীর অনুভূতি নিয়ে।

সাক্ষাৎকারের শুরুতেই আসে ঈদের সিনেমা রেসের প্রসঙ্গ। পূজা চেরী জানালেন, তার কোনো রকম দুশ্চিন্তা নেই। “আমার ক্যারিয়ারের শুরুতে হলে হয়তো চিন্তা করতাম। যেমন ‘পোড়ামন ২’-এর সময় আমি ঘুমাতে পারিনি। কিন্তু এখন আমি আত্মবিশ্বাসী, যদিও ‘ওভার কনফিডেন্ট’ নই।” তিনি আরও যোগ করেন, “বেশি সিনেমা মানে বেশি দর্শক, আর এতে সবাই লাভবান হবে। ইন্ডাস্ট্রিতে একসঙ্গে অনেক সিনেমা মুক্তি পাওয়া ইতিবাচক দিক।”

পূজা চান ইন্ডাস্ট্রির সবাই ভালো করুক। “আমার কারও সঙ্গে কোনো তুলনা নেই। আমি চাই সবাই এগিয়ে যাক। যত বেশি সিনেমা হবে, তত বেশি প্রযোজক আগ্রহী হবেন নিয়মিত কাজ করতে।”

‘টগর’-এর টিজারে তার চরিত্র ঘিরে যে রহস্য দেখা গেছে, তা নিয়েও কথা বলেন পূজা। “এই গল্পটা শুরু থেকেই আমার ভালো লেগেছে। আমরা স্ক্রিপ্ট নিয়ে অনেক কাজ করেছি। আমার চরিত্রটি একটি প্রতিবাদী মেয়ের, যে অন্যায় সহ্য করে না। তবে চরিত্রের আসল গভীরতা সিনেমা হলে গিয়ে দর্শকই আবিষ্কার করবে।”

এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য পূজাকে পাড়ি দিতে হয়েছে অভিনব এক চ্যালেঞ্জ। তাকে প্রতিদিন পান খেতে হয়েছে—তা-ও আবার ৩০টি করে! “চরিত্রটিতে বাস্তবতা আনতে পান খাওয়ার বিষয়টি আমি নিজেই প্রস্তাব করি। পান খেয়ে মুখে চুন, ঠোঁট লাল, কথা বলার ধরন সব কিছু ভিন্ন করতে হয়েছে।” তিনি বলেন, “শুরুর দিকে পান খেতে পারিনি, পিক ফেলতে পারিনি। তবে চর্চার মাধ্যমে শিখে নিয়েছি। এখন আর ভয় পাই না। একদিন তো ৩০টি পান খেতে হয়েছে!” পান খাওয়ার কারণে খেতে পর্যন্ত পারতেন না, মুখের অবস্থা হয়ে গিয়েছিল ভয়াবহ।

পূজা জানান, সিনেমার প্রতিটি দৃশ্য, গান, লোকেশন, অ্যাকশন—সব মিলিয়ে এটি একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ। “আমরা চাই দর্শক সিনেমা দেখেই বলুক—সিনেমাটি ভালো লেগেছে।”

তবে তার চরিত্রের নামটি নিয়েও রয়েছে এক আবেগঘন সম্পর্ক। সিনেমায় তার নাম ‘জয়িতা’, যা তার বাস্তব জীবনেরও অংশ। “আমার আসল নাম জয়িতা। ছোটবেলায় সবাই জয়িতা বলেই ডাকত। ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত আমার নাম ছিল জয়িতা রায় পূজা। মা নামটা রেখেছিলেন। পরে বাবার ইচ্ছায় ‘পূজা চেরী রায়’ হয়ে যায়। এখনো পরিবারের অনেকে আমাকে জয়িতা বা পূজামণি বলেই ডাকে।”

গত ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘লিপস্টিক’ থেকে এবারের ‘টগর’ পর্যন্ত যাত্রা কতটা কঠিন ছিল—এ প্রশ্নে পূজা কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, “আমি বলব, সবচেয়ে কঠিন ছিল মাকে ছাড়া কাজ করা। ‘লিপস্টিক’-এর শুটিংয়ের শুরুতে মা পাশে ছিলেন, কিন্তু শেষে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যান। তবুও মনে হয়, মাকে নিয়ে সিনেমাটি শুরু করেছিলাম, তাই তিনিই ছিলেন আমার শক্তি।”

সাক্ষাৎকারের শেষদিকে শাকিব খানের সঙ্গে ভবিষ্যতে কাজ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পূজা কৌশলে এড়িয়ে যান। বলেন, “এখন শুধু ‘টগর’-এর প্রচারে মনোযোগ দিতে চাই। সময় হলে সব বলব।”

ঈদে ‘টগর’ আসছে পূজার ভিন্ন এক রূপ নিয়ে। মুখে পান, ঠোঁটে সাহস, গল্পে প্রতিবাদ—সব মিলিয়ে এবারের পূজা যে তার আগের চেনা ছকের বাইরে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি