প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “আমরা সবাই মানুষ, আর মানুষ পরিচয়ই প্রথম। প্রত্যেক ধর্মেই শান্তির বাণী বিদ্যমান, এবং সেই শান্তির বাণী আমাদের নিজেদের মধ্যে স্থাপন করতে হবে। তাহলেই সমাজে বিভেদ দূর হবে।”
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) নিজ বাসভবন যমুনায় বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “আজকের দিনে আপনাদের সঙ্গে দেখা করে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা ধর্মীয় সংহতি চাই। সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগরিষ্ঠ শব্দগুলো আমরা ব্যবহার করতে চাই না। এই দেশে আমরা সবাই এক পরিবার। একসঙ্গে মিলেমিশে থাকার স্বপ্নই আমাদের। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ধর্মের শান্তির বাণী নিজের মধ্যে স্থাপন করতে পারলে অন্য ধর্মের মধ্যেও সেই বাণী খুঁজে পাওয়া সম্ভব। এতে ধর্মের নামে কোনো বিভেদ থাকবে না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা তখন সুন্দর শৈশব পাবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। সঞ্চালনার দায়িত্বে থাকা এই উপদেষ্টার সঙ্গে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতারা শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন। উপস্থিত ছিলেন আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ, দ্য ন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান ফেলোশিপ অব বাংলাদেশের সভাপতি বিশপ ফিলীপ পি অধিকারী, বাংলাদেশ ক্রিশ্চিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিওসহ অন্যান্য নেতারা।
বক্তব্যে খ্রিষ্টান নেতারা ড. ইউনূসের নেতৃত্বে দেশে উদারতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি গড়ে ওঠার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ বলেন, “ড. ইউনূসের নেতৃত্বে আমরা একটি গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রত্যাশা করি। মানবতার প্রতি ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ববোধ এবং ক্ষমাশীলতা এই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হোক।”
বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে আড়াই কোটি টাকা অনুদানের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানান নেতারা। তাঁরা জানান, এই অনুদান দেশব্যাপী চার্চগুলোতে বণ্টন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠান শেষে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা প্রধান উপদেষ্টাকে একটি বাইবেল উপহার দেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, এবং পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
এই মিলনমেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা উঠে আসায় বড়দিন উদযাপন আরও আনন্দমুখর হয়ে ওঠে।
কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি



















