পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিলে উপস্থিত হয়ে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, দলের সুনাম ও স্বার্থে বিএনপি কোনো অবস্থাতেই আপস করবে না, তবে দেশ ও গণতন্ত্রের বৃহত্তর স্বার্থে যে কোনো ছাড় দিতে প্রস্তুত দল।
তিনি বলেন, কেউ যদি দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তাকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। দলের ভাবমূর্তি রক্ষা করাই আমাদের অগ্রাধিকার।
তারেক রহমান বলেন, “আগামী দিনে দেশের ১২ কোটি ৫০ লাখ ভোটার যেন ব্যালটের মাধ্যমে তাদের মত প্রকাশ করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করাই আমাদের সংগ্রাম। সেই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কেউ ষড়যন্ত্র করলে আমরা তা প্রতিহত করব। আমাদের বহু নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছেন, পঙ্গু হয়েছেন, অত্যাচার সহ্য করেছেন এই ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।”
তিনি সতর্ক করে দেন, ভোটের অধিকার নিয়ে যেন কেউ নতুন করে ষড়যন্ত্র করতে না পারে, সেই লক্ষ্যে সবাইকে প্রস্তুত ও সচেতন থাকতে হবে।
তারেক রহমান দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “যখন মানুষ জানে আপনি বিএনপির কর্মী, তখন তাদের একটা প্রত্যাশা থাকে। সেই প্রত্যাশা পূরণ করাটাই এখন আমাদের দায়িত্ব। নীতি ও আদর্শ নিয়ে মানুষের কাছে যান। মানুষের সঙ্গে থাকুন, তাদের বিশ্বাস অর্জন করুন।”
তিনি আরও বলেন, “একজন রাজনৈতিক কর্মীর সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো জনগণকে খুশি রাখা এবং তাদের আস্থা ধরে রাখা।”
তারেক রহমান দাবি করেন, “রাষ্ট্রীয় যৌক্তিক সংস্কারের প্রথম প্রস্তাব বিএনপিই দিয়েছে। আমরা ছাড় না দিলে অন্যদের এতটা আত্মবিশ্বাস আসত না। বিএনপি বড় দল, আমাদের দায়িত্বও বড়। তাই গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতেই আমরা ছাড় দিয়েছি, দিচ্ছি।”
তিনি বলেন, “যখনই বাংলাদেশ সংকটে পড়েছে, বিএনপি তখনই সোচ্চার থেকেছে। এমনকি আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শূন্য সময়ে দেশের শৃঙ্খলা ধরে রাখার দায়িত্বও বিএনপি পালন করেছে। ইতিহাস এ কথা বলে।”
তারেক রহমান বলেন, “আমরা কেবল রাষ্ট্রে নয়, দলের মধ্যেও গণতন্ত্র চর্চা চাই। ভিন্নমতকে গুরুত্ব দিই, শুনি, এবং সমাধানের পথ খুঁজি। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, তাই আলোচনা ও পরামর্শে সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টাই করি।”
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির এই সম্মেলনে উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ চুন্নু মিয়া এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেনসহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা।