close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

দেশে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যুক্তরাজ্যে চার মাসের উন্নত চিকিৎসা শেষে কাতারের রাজপরিবারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশে ফিরলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার ফেরাকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে চলছে নিরাপত্তার চাদর, নেতাকর্মীদের মা..

চার মাসের দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ (মঙ্গলবার, ৬ মে) দেশে ফিরেছেন। সকাল ১০টা ১০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে তাকে বহনকারী কাতারের রাজপরিবারের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি।

যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সোমবার (৫ মে) রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি। পথে কাতারের রাজধানী দোহায় হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ঘণ্টার যাত্রা বিরতিতে প্রয়োজনীয় জ্বালানি সংগ্রহ শেষে মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় পৌঁছায় বিমানটি।

সঙ্গে ছিলেন তার দুই পুত্রবধূ, পরিবার ও চিকিৎসা-সহকারীরা। এই চার মাসে খালেদা জিয়া চিকিৎসা নিয়েছেন লন্ডনের বিভিন্ন উন্নত হাসপাতালে, বিশেষ করে তার দীর্ঘদিনের লিভার সিরোসিস, কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিস নিয়ে।


 নিরাপত্তা বলয়ে খালেদা জিয়ার প্রত্যাবর্তন

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) খালেদা জিয়ার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে নিয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা। গুলশানের বাসভবন ফিরোজা ও বিমানবন্দর এলাকা ঘিরে মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা বাহিনী।

সঙ্গে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নির্দেশনা—কেউ বিমানবন্দরের ভেতরে কিংবা গুলশান বাসভবনে প্রবেশ করতে পারবে না।

অভ্যর্থনার জন্য বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে ভাগ করে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেন, যেমন—

  • ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি: বিমানবন্দর থেকে লা মেরিডিয়েন হোটেল পর্যন্ত

  • ছাত্রদল: লা মেরিডিয়েন থেকে খিলক্ষেত

  • যুবদল: খিলক্ষেত থেকে হোটেল র‍্যাডিসন

  • মহিলা দল ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা: গুলশান-২ গোলচত্বর পর্যন্ত

পথজুড়ে দলীয় পতাকা হাতে নেতাকর্মীদের ভিড় দেখা গেছে। মোটরসাইকেল বহর বা হেঁটে গাড়ির পেছনে যাওয়ার অনুমতি ছিল না।


 রাজনৈতিক বার্তা কী দিচ্ছে এই প্রত্যাবর্তন?

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কারাবন্দি ছিলেন। তার চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তার কথা বারবার বললেও, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার বিদেশে যেতে অনুমতি দেয়নি।

তবে সরকার পতনের পরপরই তার চিকিৎসা-সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা দূর হয়। সাম্প্রতিক সময়ে আদালতের পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট হয়েছে, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা বহু মামলা ছিল ‘হয়রানিমূলক’।

এদিকে নেতাকর্মীরা মনে করছেন, খালেদা জিয়ার প্রত্যাবর্তন শুধুই চিকিৎসার সমাপ্তি নয়, বরং এটি রাজনৈতিক মাঠে ফেরার এক শক্ত বার্তা

সামনের দিনগুলোতে কী ঘটতে পারে?

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা সামনে রেখে বিএনপির রাজনীতিতে যেন নতুন গতি আসছে। দলের নেতারা বলছেন, এই প্রত্যাবর্তন শুধু আবেগ নয়, বরং দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলফলক।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, আইনি লড়াই, দলের অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠনসহ নানা বিষয়েই তার নেতৃত্বের প্রত্যাবর্তন দলের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।


বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা শুধু একজন নেত্রীর প্রত্যাবর্তন নয়—এটি দেশের রাজনীতিতে একটি মোড় পরিবর্তনের সম্ভাবনাকে সামনে নিয়ে এসেছে। চার মাসের নির্জনতা ভেঙে তিনি ফিরেছেন, আর তার সঙ্গে ফিরে এসেছে হাজারো নেতাকর্মীর আশা-আকাঙ্ক্ষা।

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি