close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

দেশে আরেকটি বড় আন্দোলনের আভাসের কথা জানালেন মিরাজ মিয়া

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
৪৪তম বিসিএসের পদসংখ্যা না বাড়লে বড় আন্দোলনের আশঙ্কা প্রকাশ করলেন অ্যাক্টিভিস্ট মিরাজ মিয়া। চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষোভ ক্রমেই বিস্ফোরণের দিকে যাচ্ছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি।..

৪৪তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হাজারো তরুণ-তরুণীর ভাগ্য আজ ঝুলে আছে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ওপর। এই পরিপ্রেক্ষিতে চাকরিপ্রত্যাশীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষা ও হতাশার ছবি সামনে এনে জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক সহ-মুখপাত্র এবং সমাজকর্মী মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, দেশে আবারো একটি বড় আন্দোলন শুরু হতে যাচ্ছে।

সোমবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি বিসিএস নিয়োগপ্রক্রিয়ার অস্বচ্ছতা, পদসংখ্যা না বাড়ানো এবং প্রশাসনিক অনীহার বিরুদ্ধে সরব হন। তার এই পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ে। শেয়ার করেছেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহসহ অনেকেই।

মিরাজ মিয়া তার পোস্টে লিখেন, “আমার মনে হচ্ছে, শিগগিরই বাংলাদেশে আরেকটি বড় আন্দোলন হতে যাচ্ছে—এবারের ইস্যু হবে চাকরির পরীক্ষাগুলোকে কেন্দ্র করে। বিশেষ করে ৪৪তম বিসিএসের প্রায় ১২ হাজার প্রার্থীকে নিয়ে রাষ্ট্র এক ভয়ংকর প্রতারণার দিকে এগোচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “বিভিন্ন ক্যাডারে পদ খালি থাকলেও সেগুলো কেন রাখা হচ্ছে, সেটি এক রহস্য। সরকারের আগের আমলে যেমন ৪০তম, ৪১তম, ও ৪৩তম বিসিএসে পদসংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছিল, এবার তেমন কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। ইন্টারিম সরকারের অধীনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরিত চিঠি পৌঁছালেও, তিনি এখনো তাতে সই করেননি—এই তথ্যই এখন সব জায়গায় আলোচনার কেন্দ্রে।”

মিরাজ মিয়া আশঙ্কা করে বলেন, “চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে গভীর ক্ষোভ জমে উঠছে। তাদের ধারণা হচ্ছে, হয়তো আবারও দলীয়করণ, পেছনের দরজা বা রাজনৈতিক বিবেচনায় পদ নিয়োগ দেওয়া হবে। যখন জেনারেল ক্যাডার ও শিক্ষা ক্যাডারে পর্যাপ্ত শূন্যপদ রয়েছে, তখন নতুন পদ না বাড়ানোর পেছনে তো কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না। এটি অন্যায় এবং বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত।”

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমার চেনা অনেক মেধাবী প্রার্থী আছে, যারা সফলতার সঙ্গে প্রিলি, লিখিত এবং ভাইভা সবই পাস করেছে। কিন্তু তারা এখনো জানে না তাদের ভবিষ্যত কী। যখন রাষ্ট্রে এত পদ খালি, তখন কেন নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না?”

তিনি উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘায়িত বিসিএস হচ্ছে ৪৪তম বিসিএস। পরীক্ষার্থীরা এক ভাইভা দিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারেনি, আবার ডাকা হয়েছে দ্বিতীয়বার। চার বছর ধরে তারা বিসিএস চক্রে বন্দি। অথচ তাদের নিয়োগ দিতে সরকার যেন চরম উদাসীন।”

মিরাজ মিয়া অভিযোগের তীর ছুঁড়েছেন সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার দিকেই। বলেন, “জনপ্রশাসন সচিব পদসংখ্যা বৃদ্ধির চিঠি পাঠালেও প্রধান উপদেষ্টা এখনো তাতে সই করেননি। এই অবহেলার দায় তাঁকেই নিতে হবে। তিনি কীভাবে দায়িত্ব পালনের কথা ভাবছেন, সেটি বড় প্রশ্ন।”

পোস্টের শেষাংশে মিরাজ বলেন, “যারা একদিন আন্দোলন করে আপনাদের সরকারে এনেছে, আজ তাদের কণ্ঠস্বর কেন উপেক্ষিত হচ্ছে? খালি পদ থাকা সত্ত্বেও যদি পদসংখ্যা না বাড়ে, তাহলে চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে জন্ম নেওয়া ক্ষোভ অনিবার্যভাবেই সড়কে বিস্ফোরিত হবে।”

তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে সরাসরি উদ্দেশ করে লেখেন, “ড. ইউনূস পদ বাড়াচ্ছেন না—এই অভিযোগ এখন শিক্ষার্থীদের মুখে। এই খবরটা যেন তাঁর কানে পৌঁছে।

 মিরাজ মিয়ার এই পোস্ট চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে জমে থাকা হতাশা ও ক্ষোভকে একধরনের সামাজিক ডাক হিসেবে সামনে নিয়ে এসেছে। সরকার যদি সময়মতো পদসংখ্যা বৃদ্ধি এবং স্বচ্ছ নিয়োগ নিশ্চিত না করে, তাহলে দেশে আবারও একটি বৃহৎ ছাত্র আন্দোলনের মুখে পড়তে পারে — যার প্রভাব হবে বহুস্তরীয় ও গভীর।

No comments found


News Card Generator