ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২২ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্য দিয়ে স্পষ্ট যে, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আবারও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নির্বাচনের আমেজ ফিরছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান এই কমিটির অনুমোদন দেন। গতকাল মঙ্গলবার উপাচার্যের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয় কমিটির প্রথম বৈঠক, যেখানে নির্বাচনসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে শুরু হয় উচ্চপর্যায়ের আলোচনা।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য নিজেই। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, এবং বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সিনিয়র শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান এবং সদস্য-সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ।
বৈঠকে কী কী আলোচনায় এসেছে?
বৈঠকে উঠে আসে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি, ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, এবং অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ তৈরি করার বিষয়। সদস্যরা নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য করার জন্য বিভিন্ন দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ দেন।
এ সময় চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও প্রস্তুতি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
উপদেষ্টা কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব প্রধান অনুষদের ডিন ও বিভাগীয় প্রধানদের রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন—
-
আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হক
-
বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম
-
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান
-
জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. একরামুল হক
-
ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. সেলিম রেজা
-
ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. উপমা কবির
-
চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম শেখ
-
প্রাক্তন ডিন ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপকবৃন্দ
এছাড়াও প্রশাসনিক দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারাও রয়েছেন কমিটিতে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, শিগগিরই নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণা করা হবে। এর পরই শুরু হবে প্রচার-প্রচারণা, এবং প্রস্তুতি আরও গতি পাবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে। অনেকে মনে করছেন, এটি হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
দীর্ঘ বিরতির পর ডাকসু নির্বাচন নিয়ে যে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন, তা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে উপদেষ্টা কমিটি গঠনের মাধ্যমে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচনই এখন প্রত্যাশা।