close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা না হতে দেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা: ছাত্র আন্দোলনের নেতা আব্দুল হান্নান মাসুদ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিএনপির বিরোধিতা, জাতীয় সরকার গঠন এবং ছাত্র আন্দোলনের ভূমিকা – ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ বুধবার রাতে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল
বিএনপির বিরোধিতা, জাতীয় সরকার গঠন এবং ছাত্র আন্দোলনের ভূমিকা – ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ বুধবার রাতে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ এক ফেসবুক পোস্টে একটি চমকপ্রদ দাবি করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, কিছু রাজনৈতিক মহল ২০০৭ সালের পরবর্তী সময়ে ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দেখতে চায়নি এবং তার এই পদে আসতে না দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছিলো। এটি ছিলো একটি রাজনৈতিক খেলাও, যা দেশের জাতীয় স্বার্থ এবং গণতন্ত্রের পক্ষে ছিল না, বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এ ব্যাপারে মাসুদ বলেন, ২৩ জানুয়ারি রাতে, ফেসবুকে পোস্ট করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম এবং সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের বক্তব্যের ওপর তিনি এই মন্তব্য করেন। ২০০৭ সালে দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত ছিল এবং এক সময়কার সরকার, বিশেষত ছাত্র আন্দোলন, যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তাতে সমগ্র রাজনৈতিক শ্রেণির মধ্যে কেমন তোলপাড় হচ্ছিল তা ব্যাখ্যা করেন। ১/১১ এর প্রেক্ষাপট: বিএনপির ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিপ্রেক্ষিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম যে দাবি তুলেছিলেন, তা ছিল মূলত “নিরপেক্ষ সরকারের” গঠনের প্রস্তাবনা, যা ২০০৭ সালের ১/১১ পরবর্তী পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি ঘটানোর মতো। ২০০৭ সালের জরুরি অবস্থা বা ১/১১ সরকার, যেখানে সেনাবাহিনী ভূমিকা রাখছিল, সেই সময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মির্জা ফখরুলের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে, নাহিদ ইসলাম বেশ কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, বিএনপির এই দাবি মূলত আরেকটি ১/১১ সরকার গঠনের প্রস্তুতি হিসেবেই দেখা যাচ্ছে। নাহিদ ইসলাম তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেছেন, ২০০৭ সালের ৫ আগস্ট থেকে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছিল যখন ছাত্ররা রাজপথে নেমে এসেছিল। পুলিশ এবং সরকারি বাহিনীর দ্বারা ছাত্রদের ওপর গুলি চালানো হচ্ছিল, এই সময়ে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিশেষত ক্যান্টনমেন্টে, নতুন সরকারের পরিকল্পনা গ্রহণে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু ছাত্ররা এই ধরনের কোনো রাজনৈতিক সমঝোতায় অংশ নিতে রাজি হয়নি। কেন ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় সরকার? নাহিদ ইসলাম তার পোস্টে এও বলেছেন যে, ছাত্ররা তখন জাতীয় সরকার গঠনের পক্ষে ছিলেন, কিন্তু জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাবনা অগ্রাহ্য করা হয়েছিল। ছাত্রদের মতো নাগরিক সমাজের অনেকেই চেয়েছিল যে, একটি জাতীয় সরকার গঠন করা হোক, যেখানে ছাত্র আন্দোলন এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে একত্রে কাজ করতে দেয়া হবে। তবে বিএনপি এই জাতীয় সরকারে যোগ দিতে অস্বীকার করেছিল, যার ফলে পরবর্তীতে একটি সামরিক শাসনের পুনরাবৃত্তি হওয়ায় দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা বদলে যায়। তিনি আরও বলেছেন, “এখন বিএনপি আবার জাতীয় সরকারের কথা বলছে, তবে তাদের পরিকল্পনা একেবারেই রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য, যেটি গণতন্ত্র এবং দেশের জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে।” নাহিদ ইসলাম ছাত্রদের নিয়ে বলেন, তারা একমাত্র শক্তি যারা বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে সক্ষম। ছাত্রদের ভূমিকা এবং বিএনপির ষড়যন্ত্র: নাহিদ ইসলাম বিশ্বাস করেন, ছাত্ররা দেশের অন্যতম শক্তিশালী রাজনৈতিক সত্ত্বা। তাদের বিরুদ্ধে যদি কোনো ষড়যন্ত্র করা হয়, তবে তা গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ছাত্ররা কোনোভাবেই ১/১১ ধরনের সরকারের পুনরাবৃত্তি মেনে নেবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে তীব্র অবস্থান নেবে। এছাড়া, তিনি আরও বলেন যে, দেশের বর্তমান বাস্তবতায় ছাত্ররা কোনো বিশেষ দলীয় স্বার্থের পক্ষে কাজ করে না, বরং বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থের জন্য তারা সংগ্রাম করছে। এই পোস্টে তিনি বলছেন, “বিএনপির কর্মী সমর্থকরা যে অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করছে, তা দেশের স্থিতিশীলতা এবং গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।” পরিশেষ: ছাত্রদের ঐক্য এবং জাতীয় স্বার্থে সমঝোতা নাহিদ ইসলাম পরিশেষে বলেন, “বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে এবং দেশের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করবে।” তিনি বিএনপির অভ্যুত্থান আকাঙ্ক্ষী অংশের বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, তারা যেন গণতন্ত্র এবং জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেয়। তিনি ছাত্রদের প্রতি আহ্বান জানান, “ছাত্র-জনতা যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে, তবে দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট বদলে যেতে পারে এবং একটি সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি হবে।” এই সংবাদে যে বিষয়গুলি উঠে এসেছে তা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ছাত্র আন্দোলনের শক্তি নিয়ে একটি গভীর আলোচনা তৈরি করছে। দেশের আগামী দিনগুলোর জন্য কী ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তন আসবে, সেটি সময়ের ওপর নির্ভর করবে। অবশেষে, এটি পরিষ্কার যে, ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক দলগুলো যখন একত্রে কাজ করবে, তখনই দেশে সঠিক পরিবর্তন সম্ভব।
کوئی تبصرہ نہیں ملا