চট্টগ্রামে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে করোনাভাইরাস। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ পেরোতেই সংক্রমণের উর্ধ্বগতি চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে স্বাস্থ্য বিভাগ ও জনমনে। সর্বশেষ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে পাঠানো ২৪ ঘণ্টার স্বাস্থ্য প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন করে ১৫ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১২০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জনের শরীরে মিলেছে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব। শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ৭ জন, মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে ১ জন, এপি কেয়ার হাসপাতালে ১ জন এবং মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ৬ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।
করোনা সংক্রমণের এই উর্ধ্বগতি গত জুন মাসের শুরু থেকেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মাসের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট ১৬০ জন করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তবে উদ্বেগের বিষয় হলো—এ মাসেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭ জন।
সর্বশেষ মৃত্যু ঘটেছে গত শুক্রবার। নগরের জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সালেহা বেগম (৬২) নামের এক নারী প্রাণ হারান। জানা গেছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন এবং করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তার অবস্থার অবনতি ঘটে।
চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জুন মাসের শুরু থেকেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়মিতভাবে বাড়ছে। অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না, আবার কেউ কেউ সামান্য উপসর্গেও পরীক্ষা করাচ্ছেন না। এতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াস চৌধুরী জানান, “বর্তমানে শনাক্তের হার তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। আমাদের কাছে আসা নমুনার বেশিরভাগই উপসর্গযুক্ত রোগীর। জনগণকে সচেতন না করা গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।”
চট্টগ্রাম নগরীর হাসপাতালগুলোতেও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কিছু হাসপাতাল আবারও করোনা ইউনিট চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। হাসপাতালগুলোর আইসোলেশন শয্যা ও অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা ঝালাই করে দেখা হচ্ছে।
জনসাধারণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছে, হালকা জ্বর, কাশি বা গলা ব্যথা দেখা দিলেই দ্রুত পরীক্ষা করাতে হবে। একইসঙ্গে গণপরিবহন, মার্কেট, অফিস বা অন্যান্য জনসমাগমস্থলে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি।
চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বলছে, করোনা হয়তো পুরোপুরি ফিরে আসেনি, কিন্তু তা একেবারে শেষও হয়নি। তাই সচেতনতা এবং স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			