close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

চট্টগ্রাম পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো নিজ জেলা চট্টগ্রাম সফরে এলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে বক্তা হিসেবে যোগদানের পাশাপাশি, ফিরছেন সেই ঐতিহাসিক জোবরা গ..

বাংলাদেশের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টা, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ও ক্ষুদ্রঋণের পথিকৃৎ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ নিজ জেলা চট্টগ্রামে পা রাখলেন। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে এটিই তার প্রথম চট্টগ্রাম সফর, ফলে সফরটি বহুমাত্রিক গুরুত্ব বহন করছে।

১৪ মে, বুধবার সকালে তিনি রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি ফ্লাইটে করে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। আগমনের সঙ্গে সঙ্গে বন্দরনগরীতে নিরাপত্তা ও কৌতূহলের আবহ তৈরি হয়।

এই সফর শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়; এটি এক অর্থে তার শিকড়ে ফিরে আসাও। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তনে প্রধান বক্তা হিসেবে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি তিনি যাবেন চট্টগ্রামের সেই ঐতিহাসিক জোবরা গ্রামে—যেখানে আশির দশকে তিনি শুরু করেছিলেন তার ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্প। সেখান থেকেই তৈরি হয়েছিল "গ্রামীণ ব্যাংক" মডেল, যা বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনের অন্যতম প্রতীক হয়ে উঠেছে।

জোবরা গ্রাম আজ ইউনূসের জন্য শুধুই স্মৃতিচারণের জায়গা নয়; এটি অর্থনৈতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়। এই গ্রামে ইউনূসের আগমন তাই কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এক প্রতীকী প্রত্যাবর্তন।

প্রধান উপদেষ্টার সফরসূচি অনুযায়ী, তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে অবস্থিত এনসিটি-৫ (নিউ কন্টেইনার টার্মিনাল) এলাকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সভায় অংশ নেবেন। এই সভায় উপস্থিত থাকবেন বন্দর ও নৌ চলাচল খাতের শীর্ষ কর্মকর্তা, বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনের প্রতিনিধি এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা। সেখানে তিনি সরকারের আগাম অর্থনৈতিক পরিকল্পনা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিবেশ এবং বন্দর পরিচালনার বিভিন্ন দিক নিয়ে মতবিনিময় করবেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সফরের মাধ্যমে চট্টগ্রাম তথা দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অবকাঠামো, ব্যবসা এবং কর্মসংস্থানের বিষয়ে সরকারের অগ্রাধিকার পুনর্ব্যক্ত হচ্ছে। বিশেষ করে বন্দর ব্যবস্থাপনা, কনটেইনার ট্রানজিট এবং বাণিজ্যিক নীতিমালা নিয়ে যেসব সমস্যাগুলো দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, তা নিয়ে এবার সরাসরি পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত মিলছে।

এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তার বক্তৃতায় তিনি কী বার্তা দেন, সেটি নিয়েও ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে শিক্ষার্থী, গবেষক ও নীতিনির্ধারকদের মধ্যে। অনেকেই আশা করছেন, অধ্যাপক ইউনূস তার অভিজ্ঞতা ও বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উচ্চশিক্ষা ও উদ্যোক্তা বিকাশের বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন।

চট্টগ্রামের বুদ্ধিজীবী মহল, ব্যবসায়ী সমাজ এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে এই সফর নিয়ে ইতোমধ্যে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে এটিকে ‘ঐতিহাসিক সফর’ বলে অভিহিত করছেন। কারণ, একইসঙ্গে একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, বিশ্বখ্যাত সামাজিক ব্যবসার প্রবক্তা এবং দেশের প্রধান উপদেষ্টা যখন নিজের মাটিতে ফেরেন—তাতে জাতির প্রত্যাশা থাকে অনেক বেশি।

 

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই সফর কেবল একটি আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালনের বিষয় নয়, বরং এটি একটি নিঃশব্দ বার্তা—যে উন্নয়ন শুধু রাজধানীকেন্দ্রিক নয়, বরং দেশের প্রতিটি প্রান্তিক অঞ্চলে পৌঁছাতে হবে। তার চট্টগ্রাম সফর এক অর্থে সেই উন্নয়নের সার্বজনীন বার্তাও বটে।

Không có bình luận nào được tìm thấy


News Card Generator