close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

চট্টগ্রাম বন্দর কাউকে দিচ্ছি না, শুধু বিনিয়োগ চাচ্ছি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বন্দরের মালিকানা হস্তান্তর নিয়ে নানা গুজবের অবসান টেনে সরকার জানাল—চট্টগ্রাম বন্দর কাউকে দেওয়া হচ্ছে না। বরং বিশ্বের সেরা কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়ে বন্দর ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা ও প্রযুক্তির আ..

চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন মহলে নানা গুজব ও আলোচনা শোনা যাচ্ছিল। কেউ বলছিলেন বন্দর নাকি হস্তান্তর করা হচ্ছে বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে, কেউ বলছিলেন এটি নাকি বেসরকারিকরণ করা হচ্ছে। কিন্তু এ সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সুস্পষ্ট বার্তা দিলেন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

তিনি স্পষ্ট করে জানালেন, “চট্টগ্রাম বন্দর কাউকে দিচ্ছি না। আমরা শুধু বিনিয়োগ আহ্বান করছি যাতে করে বন্দরকে আরও আধুনিক ও দক্ষ করে গড়ে তোলা যায়।”

বন্দরের ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা

গত রবিবার (২৫ মে) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে অনুষ্ঠিত হয় ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ)-এর আয়োজিত 'সিএমজেএফ টক' অনুষ্ঠান। সেখানে অংশ নিয়ে শফিকুল আলম বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরকে আরও আধুনিকীকরণ করতে চাই আমরা। এতে করে দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি হবে এবং জাতীয় অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা চাচ্ছি, বিশ্বের বড় বড় কোম্পানিগুলো যেন আমাদের টার্মিনাল পরিচালনায় বিনিয়োগ করে এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়। এর মাধ্যমে আমরা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারব।”

তিন বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ইতোমধ্যে প্রায় তিন বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে। এই বিনিয়োগের মাধ্যমে বন্দর ব্যবস্থাপনায় নতুন প্রযুক্তি, দক্ষতা ও পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রেস সচিব বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন। একে অন্য কারো হাতে তুলে দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমাদের লক্ষ্য, এই বন্দর ব্যবস্থাপনায় যুগোপযোগী পরিবর্তন এনে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা।”

কেন বিনিয়োগ প্রয়োজন?

বিশ্ব বাণিজ্য দিনে দিনে প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠছে। চট্টগ্রাম বন্দরকে প্রতিযোগিতামূলক রাখতে হলে এর কাঠামো ও পরিচালনা পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। সরকার চাচ্ছে—বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে সেই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে, তবে মালিকানা হস্তান্তর নয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিঙ্গাপুর, দুবাই বা রটারডামের মতো বন্দরে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের ফলে কার্যকর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হয়েছে। বাংলাদেশও সেই পথেই হাঁটছে, তবে নিজস্ব কর্তৃত্ব অক্ষুণ্ণ রেখে।

 অনুষ্ঠানে আলোচনা

সিএমজেএফ টক অনুষ্ঠানে শুধু চট্টগ্রাম বন্দর নয়, আলোচনায় আসে দেশের পুঁজিবাজার, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সামগ্রিক অর্থনীতি

আলোচনায় অংশ নেওয়া অর্থনীতিবিদ, বিশ্লেষক ও সাংবাদিকরা বলেন—বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে বন্দর ব্যবস্থাপনায় আধুনিকীকরণ অপরিহার্য। তবে সরকারকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার দিকেও নজর দিতে হবে, যাতে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগকে জনগণের আস্থা হারানোর জায়গা না বানানো হয়।


 

চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। এই বন্দরকে আরও কার্যকর ও উন্নত করতে সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হতে পারে। তবে মালিকানা নয়—স্বাধীনতা ও নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেই উন্নয়নের পথে এগোতে চায় বাংলাদেশ।

Ingen kommentarer fundet


News Card Generator