সম্প্রতি গোয়েন্দা সংস্থার এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও ডাকাতির মতো অপরাধের পেছনে একটি সুসংগঠিত চক্র কাজ করছে, যা মূলত নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের পরিকল্পিত নেটওয়ার্কের অংশ। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের এই ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা পেশাদার অপরাধীদের বিভিন্ন কৌশলে মাঠে নামাচ্ছে এবং কখনো নিজেরাও সরাসরি অংশ নিচ্ছে।
এই চক্রের কার্যক্রম মূলত বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপসের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন অ্যাপে তৈরি করা গ্রুপের মাধ্যমে ছিনতাই ও ডাকাতির পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে। এসব তথ্য উদ্ঘাটনের পর নিরাপত্তা বাহিনী চক্রটির পুরো নেটওয়ার্ক শনাক্ত করতে কাজ শুরু করেছে।
পুলিশের উচ্চপর্যায় থেকে মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে অপরাধী চক্রের সদস্যদের গতিবিধি নজরদারিতে রাখা হয়। তদন্তের অংশ হিসেবে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে:
-
নিষিদ্ধ সংগঠনটির নেতাকর্মীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ।
-
রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ও সামাজিক কার্যক্রমের বিশ্লেষণ।
-
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার তথ্য সংগ্রহ।
-
তাদের পূর্ণ পরিচয়, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট নম্বর সংগ্রহ।
-
পূর্বের জিডি বা মামলা সংক্রান্ত তথ্য যাচাই।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের উদ্দেশ্য কোনো ব্যক্তিকে হয়রানি করা নয়; বরং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনটির কার্যক্রম নজরদারিতে রাখা। এই উদ্যোগের আওতায় শুধু ছাত্রলীগ নয়, অন্যান্য নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন গণ-অভ্যুত্থানের ফলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেন। এর পর থেকেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। পরে, ছাত্রসমাজের দাবির মুখে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত বছরের ২৩ অক্টোবর ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীরা গোপনে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে, যা রাজধানীসহ সারা দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।