চাঁদপুরে ১০–১২ বছরের শারীরিক প্রতিবন্ধী আশরাফ: আজ সে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী..

Alamin hosen suvo avatar   
Alamin hosen suvo
মাত্র ১০–১২ বছরের ছোট্ট আশরাফ—শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মেও হার মানেনি। ছয় মাস আগেও চাঁদপুর মোহনায় ঘুরতে আসা মানুষের কাছে খাবারের জন্য চেয়ে বেড়াত সে। আজ সে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, বাদাম বিক্রি করে ..

চাঁদপুর, তিন নদীর মোহনা—

চাঁদপুরের ব্যস্ত বড় স্টেশনে প্রতিদিন দেখা যায় ছোট্ট এক ছেলেকে। নাম তার আশরাফ। বয়স মাত্র ১০ থেকে ১২। জন্মগত শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও সে নিজের জীবনকে থামতে দেয়নি। বরং প্রতিকূলতাকে শক্তি হিসেবে নিয়েই দাঁড়িয়ে গেছে নিজের পায়ে—হয়ে উঠেছে একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

মাত্র ছয় মাস আগেও আশরাফের দিন কাটতো মানুষজনের দয়ার ওপর। মোহনায় ঘুরতে আসা লোকজনকে দেখে সে সামান্য খাবারের জন্য হাত বাড়িয়ে চাইতো। তার জীবনে তখন ছিল না কোনো আয়ের পথ, না ছিল ভবিষ্যতের কোনো দিশা। কিন্তু তার ভেতরের ইচ্ছাশক্তি আর বাঁচার তাগিদ তাকে বদলে দিলো এক নতুন মানুষে।

আজ সে বাদাম বিক্রি করে প্রতিদিন আয় করছে প্রায় এক হাজার টাকা। নিজের উপার্জনে সে যেমন খুশি, তেমনি গর্বিত। সেই গর্বই তাকে ছবি তুলতে দেয় না—কারণ সে চায় মানুষ তাকে দয়া নয়, সম্মানের সঙ্গে দেখুক। তার আত্মসম্মান যেন আকাশের মতো বিস্তৃত।

হাসিমুখে বাদাম বিক্রি করতে করতে সে ক্রেতাদের সঙ্গে স্নেহভরা কণ্ঠে কথা বলে। অদ্ভুত এক উজ্জ্বলতা আছে তার মুখে—যা পথচলতি মানুষকে অনায়াসেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ছোট্ট বয়স, শারীরিক সীমাবদ্ধতা, অনিশ্চিত অতীত—কিছুই তাকে থামাতে পারেনি।

স্থানীয়রা বলেন, আশরাফ এখন সবার স্নেহের মানুষ। তাকে দেখে অনেকেই নতুন করে বিশ্বাস পান—“মানুষ চাইলে পারে।” তার পরিবারও রয়েছে, এবং তারা জানায়, আশরাফ এখন আগের তুলনায় অনেক ভালো আছে। দিনের পর দিন হাসিমুখে নিজের কাজ করে যাচ্ছে সে।

চাঁদপুর বড় স্টেশনের তিন নদীর মোহনায় দাঁড়িয়ে থাকা এই ছোট্ট ছেলেটি প্রমাণ করছে—

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোনো মানুষের স্বপ্ন থামিয়ে দিতে পারে না; ইচ্ছাশক্তি থাকলে ছোট্ট জীবনও অসাধারণ হয়ে উঠতে পারে।

Nema komentara


News Card Generator