চাকরিচ্যুত ও মুক্ত বিডিআর সদস্যদের হুঁশিয়ারি: দাবি না মানলে যমুনার পথে পদযাত্রা দুপুর ১২টায়..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সরকারি দাবি না মানলে ১২টা ৫ মিনিটেই শাহবাগ থেকে যমুনার দিকে লংমার্চের হুঁশিয়ারি চাকরিচ্যুত ও কারামুক্ত বিডিআর সদস্যদের। উত্তাল হচ্ছে শাহবাগ, বাড়ছে উত্তেজনা।......

রাজপথে আবারও উত্তেজনার আগুন। দাবি আদায়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ চাকরিচ্যুত ও কারামুক্ত বিডিআর সদস্য ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার সকাল থেকেই শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়েছেন তারা। সরকারের কাছে তাঁদের স্পষ্ট আল্টিমেটাম—"দুপুর ১২টার মধ্যে দাবি মানতে হবে, না হলে শুরু হবে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা!"

তাঁদের দাবি, ২০০৯ সালের তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শত শত সদস্যকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে চাকরিচ্যুত ও কারাবন্দি করা হয়। এসব ঘটনার এক যুগ পরও তারা সুবিচার থেকে বঞ্চিত। এবার সেই দীর্ঘ অন্যায়ের প্রতিকার চেয়ে তারা সরাসরি রাজপথে।

চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের একজন, মারুফ সরকার, সাংবাদিকদের জানান, “সরকারকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় দিয়েছি। এর মধ্যে যদি আমাদের ন্যায্য দাবি না মানা হয়, তাহলে ১২টা ৫ মিনিটেই আমরা শাহবাগ থেকে যমুনার দিকে পদযাত্রা শুরু করব। আমরা কোনো বিশৃঙ্খলা চাই না, কিন্তু আমরা আর সহ্য করব না।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের এই অবস্থান কোনো হঠকারী পদক্ষেপ নয়। আমরা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ন্যায্যতার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু আমাদের কণ্ঠ বারবার দমন করা হয়েছে। আজকের এই অবস্থান হলো শেষ ধৈর্যের প্রকাশ।"

চাকরিচ্যুত ও কারামুক্ত বিডিআর সদস্যদের মূল দাবিগুলো হলো:

  1. ২০০৯ সালের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন তদন্ত

  2. ষড়যন্ত্রমূলকভাবে চাকরি হারানো সদস্যদের পুনর্বহাল

  3. কারাবন্দি সদস্যদের মুক্তি ও তাদের পরিবারের পুনর্বাসন

  4. ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও স্থায়ী কল্যাণ পরিকল্পনা

  5. সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের নিশ্চয়তা

তাদের এ ঘোষণা ঘিরে রাজধানীজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শাহবাগ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক টিম মোতায়েন রয়েছে। যান চলাচলে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

সরকারের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, “বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।”

রাজপথে যে কোনো আন্দোলনের প্রভাব পড়ে সাধারণ মানুষের ওপরও। ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ আশঙ্কা করছেন, পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়, তাহলে শহরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হবে।

যেখানে দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত ও অপমানিত এক শ্রেণির মানুষ ন্যায্য অধিকারের জন্য পথে নামছে, সেখানে শুধু আইন-শৃঙ্খলা দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নয়—প্রয়োজন আন্তরিক রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ।

দুপুর ১২টা বাজতে আর বেশি দেরি নেই। এখন দেখার বিষয়—সরকার দাবি মানে, নাকি ১২টা ৫ মিনিটে শুরু হয় আরেকটি ইতিহাসের আগুনঝরা পদযাত্রা।

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি


News Card Generator