close
ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!
ঢাকা: বহুল আলোচিত নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে চলমান এই মামলায় অবশেষে সুবিচার পেলেন আসামিরা।
আদালতের রায় ঘোষণা
আজ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আত্মপক্ষ সমর্থন ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য এদিন ধার্য করা হয়।
আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্কে বলেন, মামলার কোনো অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি। আত্মপক্ষ সমর্থন শুনানিতে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়া বর্তমানে চিকিৎসার জন্য বিদেশে থাকায় আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। তার পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
দুদকের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি
অন্যদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করে। তবে বিচারক সব তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে রায়ে উল্লেখ করেন এবং সকল আসামিকে খালাস দেন।
১৭ বছরের পুরনো মামলা ও অভিযোগ
২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় এ মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ ছিল, কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে একটি অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩,৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
২০১৮ সালের ৫ মে মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। তবে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর আজ আদালত রায় দিলেন, যা বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য একটি স্বস্তির খবর।
মামলার অন্যান্য আসামিরা
এই মামলায় খালেদা জিয়া ছাড়াও আসামি ছিলেন:
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী
জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম
সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউছুফ হোসাইন
বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক
ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন
ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া
নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ
এদের মধ্যে কাশেম শরীফ, মীর মইনুল হক ও কামাল উদ্দিন পলাতক ছিলেন।
বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতিক্রিয়া
রায় ঘোষণার পর বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। তারা একে ন্যায়বিচার বলে উল্লেখ করেছেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, "এটি সত্য ও ন্যায়ের জয়। দীর্ঘদিন ধরে সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে এই মামলা পরিচালনা করছিল। কিন্তু আজ প্রমাণ হলো, এটি ছিল মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।"
শেষ কথা
১৭ বছর ধরে চলমান এই মামলার অবসান হওয়ায় রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই রায়ের প্রভাব আগামী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এখন দেখার বিষয়, দুদক এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে কি না।
Tidak ada komentar yang ditemukan