close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

বড়পুকুরিয়া খনি রক্ষায় শ্রমিকদের ৬ দফা ঘোষণা

Sifat Asmain avatar   
Sifat Asmain
****

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিকে “ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা” এবং খনিকে লাভজনকভাবে সচল রাখার দাবিতে ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেছে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন। সোমবার সকাল ১১টায় সিবিএ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি উপস্থাপন করেন শ্রমিক-কর্মচারী নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কাশেম শিকদার। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিবিএর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় খনি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রায়হানুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা রবিউল ইসলামসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা অভিযোগ করেন, দেশের একমাত্র লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা খনিকে পরিকল্পিতভাবে লোকসানি দেখিয়ে বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। তারা বলেন, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র দীর্ঘদিন আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় খনির উৎপাদিত কয়লা ব্যবহার হচ্ছে না। ফলে কোল ইয়ার্ডে বিপুল পরিমাণ কয়লা ঝুঁকিপূর্ণভাবে মজুত রয়েছে। ধারণক্ষমতা ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন হলেও সেখানে প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন কয়লা স্তূপ করে রাখা হয়েছে, যা নিরাপদ উচ্চতার তুলনায় অনেক বেশি। প্রায় ৫০ ফুট উচ্চতায় কয়লা জমে থাকায় পাহাড়ধসের মতো ধসের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে এবং বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙে সড়ক বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, অতীতে স্থানীয় ইটভাটা ও শিল্পকারখানায় কয়লা সরবরাহ করা হলেও মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে এখন কেবল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রেই সরবরাহ করা হয়। একদিকে পিডিবি কয়লা ব্যবহার করতে পারছে না, অন্যদিকে স্থানীয় শিল্প ও ডমেস্টিক সেক্টরে ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বিক্রির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।

তারা জানান, প্রতি টন কয়লার উৎপাদন ব্যয় ১৭৬ ডলার হলেও পিডিবি ৯১–১০৭ ডলার মূল্য পরিশোধ করায় খনি বিপুল লোকসানের মুখে পড়ছে। খোলা বাজারে যেখানে বড়পুকুরিয়ার কয়লার দাম ২০০ ডলারের বেশি, সেখানে অযৌক্তিকভাবে দাম কমিয়ে খনিকে লোকসানি দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শ্রমিক নেতারা। বক্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, খনি বন্ধ হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় ২০–২৫ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিক ইউনিয়ন খনিকে সচল ও লাভজনক রাখতে ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ১. পিডিবিতে কম দামে কয়লা বিক্রির পরিবর্তে লোকাল মার্কেটে ২০০ ডলারের বেশি দামে বিক্রির অনুমতি, ২. লোকাল মার্কেটের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পিডিবির কয়লার মূল্য নির্ধারণ, ৩, কয়লা খনির বোর্ড বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের দিয়ে, ৪, পরিচালনা না করা, ৫, অযৌক্তিকভাবে কয়লার দাম কমিয়ে খনি বন্ধের চক্রান্ত বন্ধ করা, ৬. কয়লার দাম নির্ধারণে শ্রমিকদের মতামত অন্তর্ভুক্ত করা, ৭. খনিকে আদমজী পাটকলের মতো লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত না করার নিশ্চয়তা প্রদান।

দাবি আদায় না হলে রাজপথ–রেলপথ অবরোধসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন শ্রমিক নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন ও খনি শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

No comments found


News Card Generator