close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

বন্দরে চাদার দাবীতে সবজি ব্যাবসায়ীকে পিটিয়ে জখম, থানায় অভিযোগ....

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নারায়ণগঞ্জ বন্দরে চাঁদার টাকা না দেওয়ায় এক সবজি ব্যবসায়ীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে ও তার সহযোগীরা। ভুক্তভোগীকে পেপার মিলের পরিত্যক্ত কারখানায় তুলে নিয়ে গিয়ে ইট দিয়ে ম..

চাঁদার টাকার জন্য নরক যন্ত্রণা! নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পশ্চিম কেওঢালা এলাকায় চাঁদা না দেওয়ার অপরাধে এক নিরীহ সবজি ব্যবসায়ীকে ভয়াবহভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এই নির্মম ঘটনা ঘটে, যা এখন পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

ভুক্তভোগী মো. নাহিদ মদনপুর একতা সুপার মার্কেটের একজন দীর্ঘদিনের সবজি ব্যবসায়ী। তার বাড়ি কেওঢালা এলাকায় হলেও জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন বাজারে যান তরকারি বিক্রি করতে। অভিযোগে বলা হয়, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন এবং তার ছেলে আবু কালাম, আবু তালেব, আব্দুস সালাম ও অন্যান্যরা অতীতে একতা মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করতো।

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর কিছুদিন এই চাঁদাবাজ চক্র আত্মগোপনে ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর তারা আবার প্রকাশ্যে এসে পূর্বের মতো দাপট দেখাতে শুরু করে। নতুন করে চাঁদা দাবি শুরু করে এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছে। নাহিদের কাছ থেকে তারা এককালীন ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।

নাহিদ তাদের দাবিকে অস্বীকার করলে, রোববার বিকেলে একা পেয়ে আলাউদ্দিনের ছেলে পুস্প, সুজনসহ আরও কয়েকজন নাহিদকে প্রথমে তার বাড়ির সামনেই মারধর করে। এরপর তাকে জোরপূর্বক একটি পরিত্যক্ত পেপার মিলের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চলে আরও ভয়াবহ নির্যাতন। ইট দিয়ে মাথা থেতলে দেওয়া হয়, লাঠিসোঁটা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করা হয়। নির্যাতনের সময় তার সঙ্গে থাকা একটি মোবাইল ফোন ও নগদ ১৫ হাজার টাকা কেড়ে নেয় হামলাকারীরা।

পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় নাহিদকে উদ্ধার করে নিকটবর্তী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হলে, বিকেলেই তিনি বন্দর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এই ঘটনার বিষয়ে বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, “মদনপুর এলাকার একজন সবজি ব্যবসায়ী আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। সঠিক তদন্তের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ঘটনায় শুধু নাহিদ নয়, তার পরিবার ও স্থানীয় দোকানিরাও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এলাকার অনেকে বলছেন, "চাঁদা না দিলে ব্যবসা করা যাবে না — এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে। যদি এখনই পুলিশ ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এই চক্র আবার সক্রিয় হয়ে উঠবে।

একটি স্বাধীন দেশে যেখানে একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হালাল উপার্জনের জন্য সংগ্রাম করছে, সেখানে রাজনৈতিক পরিচয়ের জোরে কিছু ব্যক্তির চাঁদাবাজি ও দানবীয় নির্যাতন সভ্য সমাজের জন্য কলঙ্ক। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন কতটা কার্যকর ব্যবস্থা নেয় — না কি এই চক্র আবার আড়াল থেকে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ফিরে আসে।

No comments found