‘বিশেষ সুবিধা’ চালুতে সরকারি চাকরিজীবীদের প্রণোদনা বাতিল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন 'বিশেষ সুবিধা' চালু করল সরকার। তবে এতে বাতিল হলো পূর্বের প্রণোদনা ভাতা। ১ জুলাই থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন নিয়ম।..

সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য সরকার নতুন করে ‘বিশেষ সুবিধা’ চালুর ঘোষণা দিয়েছে, যা আগামী ১ জুলাই ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, চাকরিরতদের ন্যূনতম এক হাজার ৫০০ টাকা এবং পেনশনভোগীদের ন্যূনতম ৭৫০ টাকা করে দেওয়া হবে এই সুবিধার আওতায়। তবে এই সুবিধা চালুর ফলে বাতিল হয়ে গেছে পূর্ববর্তী ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা সুবিধা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে চালু ছিল।

সোমবার, ২৩ জুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, নতুন এই ‘বিশেষ সুবিধা’ জনস্বার্থে গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং এর মাধ্যমে বিদ্যমান প্রণোদনা কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রবিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব দিলরুবা শাহীনার স্বাক্ষরিত এ প্রজ্ঞাপন অনুসারে, জাতীয় বেতন স্কেলে থাকা বেসামরিক, রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুলিশ ও বর্ডার গার্ডসহ সব কর্মচারী এবং পেনশনাররা এই সুবিধার আওতায় পড়বেন।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, পেনশনের হার অনুযায়ী ‘বিশেষ সুবিধা’ ভিন্ন ভিন্ন হারে দেওয়া হবে। যেসব পেনশনারের মাসিক নিট পেনশন ১৭,৩৮৮ টাকার কম, তারা ১৫ শতাংশ হারে এই ভাতা পাবেন। আর যাদের পেনশন এর চেয়ে বেশি, তাদের জন্য হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ শতাংশ। এতে কিছু কর্মচারীর সুবিধা বেড়েছে, আবার কিছু কর্মচারী বঞ্চিতও হয়েছেন।

উদাহরণস্বরূপ, একজন পিয়ন বা দারোয়ান যার বেতন ১০,০৫০ টাকা, তিনি ১৫% হারে ভাতা পেলে তা দাঁড়ায় ১৫০৭.৮০ টাকা। কিন্তু যেহেতু আগের প্রজ্ঞাপনে তাকে দেওয়া হচ্ছিল এক হাজার টাকা, সেক্ষেত্রে বাস্তবিকভাবে তার বাড়তি সুবিধা মাত্র ৫০৭.৮০ টাকা। অথচ পুরোনো প্রণোদনা হিসেবে তিনি পাচ্ছিলেন ৫% হারে ভাতা। এখন তা পুরোপুরি বাতিল হওয়ায় অনেকেই হতাশ।

এদিকে সংশোধিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ৩ জুন ২০২৫ তারিখের পূর্ববর্তী প্রজ্ঞাপনটি পরিবর্তন করে নতুন হারে ভাতা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে চাকরিজীবীদের মধ্যে এক ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, যেখানে একদিকে বিশেষ সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে, অন্যদিকে পূর্বের প্রণোদনা বাতিল করে তা আবারও ভারসাম্যহীন করে তোলা হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি মূলত একটি সামঞ্জস্যসূচক বাজেট সিদ্ধান্ত হলেও, যেসব নিম্নআয়ের সরকারি কর্মচারীরা পূর্ববর্তী প্রণোদনার মাধ্যমে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছিলেন, তাদের জন্য এটি আঘাতের শামিল। যদিও সরকার বলছে, জনস্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত।

চাকরিজীবী মহলে এখন চলছে হিসাব-নিকাশ। কারা বেশি সুবিধা পেলেন, আর কারা পুরোনো সুবিধা হারালেন—এ নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরকারের এই পদক্ষেপ কাঠামোগত দিক থেকে ইতিবাচক হলেও, এতে সব শ্রেণির কর্মচারীর সমান উপকার নিশ্চিত হয়নি।

সরকারের এই নতুন সিদ্ধান্ত একদিকে বাড়তি সুবিধা দিলেও অন্যদিকে পুরোনো প্রণোদনা বাতিল করে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। জুলাই থেকে এই নিয়ম বাস্তবায়িত হলে প্রকৃত উপকারভোগীদের চিত্র স্পষ্ট হবে। তবে এতে যে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন—তাতে সন্দেহ নেই।

कोई टिप्पणी नहीं मिली


News Card Generator