বিশ্বব্যাংক থেকে ৫০ কোটি ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য ৫০ কোটি ডলার অর্থ সহায়তা দিয়েছে। এই উদ্যোগ সরকারের আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা ও জনগণের প্রতি আস্থা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা র..

বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনায় সুশাসন ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংক ৫০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা অনুমোদন করেছে। এই অর্থের বাজারদর বর্তমানে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার সমান। শনিবার (২১ জুন) বিশ্বব্যাংকের ওয়াশিংটন ডি.সি. সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এই অর্থায়নের অনুমোদন দেয়া হয়।

বিশ্বব্যাংকের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই সহায়তা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের নতুন অর্থায়নের মোট পরিমাণকে ৩০৭ কোটি মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছে। অর্থাৎ, বাংলাদেশ পাচ্ছে বড় ধরনের আর্থিক সাপোর্ট, যা দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো ও সরকারি ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে।

বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তী কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন,সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন বাংলাদেশের টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত জরুরি। সরকার তার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো উন্মুক্ত ও জবাবদিহিমূলক করতে নানা সাহসী পদক্ষেপ নিচ্ছে, যাতে সেগুলো জনগণের জন্য আগের চেয়েও ভালোভাবে কাজ করতে পারে।

তিনি আরও জানান, এই অর্থায়ন সরকারের নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রক কাঠামো শক্তিশালী করার পাশাপাশি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তুলতে সহায়তা করবে, যার সুফল দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছাবে। গেইল মার্টিন বলেন, “গত সপ্তাহে অনুমোদিত আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়নে সরকারকে সহযোগিতা করছি।

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে। এই পর্যন্ত তারা ৪৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান ও স্বল্পসুদে ঋণ প্রদান করেছে, যা বাংলাদেশের বহু অর্থনৈতিক খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

এদিকে, বিশ্বব্যাংকের এই ৫০ কোটি ডলারের অনুমোদনের পাশাপাশি গত বৃহস্পতিবার এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দেয়। অর্থাৎ, চলতি জুন মাসের মধ্যে বাংলাদেশ প্রায় ১০০ কোটি ডলার বড় ধরনের আর্থিক সহায়তা পাবে।

বিশ্বব্যাংক ও এডিবির বাজেট সহায়তার অর্থ ৩০ জুনের মধ্যে বাংলাদেশে পৌঁছে যাবে। এছাড়াও আগামী সোমবার (২৩ জুন) আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর বোর্ড সভায় ঋণের দুই কিস্তির অর্থ অনুমোদন হতে পারে। অনুমোদিত হলে বাংলাদেশ পাবে আরও ১৩০ কোটি ডলার। এই অর্থও অনুমোদনের দুই সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশে পৌঁছে যাবে।

অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের অর্থায়ন দেশের সরকারি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার উন্নয়ন ঘটাবে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির গতি আরও বৃদ্ধি পাবে। এর পাশাপাশি, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সেবা প্রসারিত ও উন্নত করতে সক্ষম হবে।

সরকারও বলেছে, তারা এই অর্থায়ন সঠিকভাবে ব্যবহার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং দেশের অর্থনৈতিক সুরক্ষা ও জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করতে বিশ্বব্যাংক, এডিবি এবং আইএমএফের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে কাজ করবে।

বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত গতি ধরে এগুচ্ছে। বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের এই আর্থিক সহায়তা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচনে সহায়ক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের জন্য এই সমন্বিত আর্থিক সাপোর্ট সরকারের সংস্কার ও উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশ আরও স্থিতিশীল ও উৎসাহব্যঞ্জক হবে।

এর ফলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক মঞ্চে নিজের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে পারবে এবং ভবিষ্যতে বৃহত্তর বিনিয়োগ ও অর্থায়নের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে।

No comments found