বিশ্ববাজারে তেলের ভয়াবহ পতন! ২০২১ সালের পর সর্বনিম্ন দামে নেমে এলো ব্রেন্ট ও মার্কিন ক্রুড অয়েল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিশ্ববাজারে তেলের এমন দরপতন একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা, অন্যদিকে রপ্তানিনির্ভর দেশগুলোর জন্য এক ভয়াবহ সংকটের ইঙ্গিত বহন করছে। পরিস্থিতির উন্নতির জন্য বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতা এ..

বিশ্ববাজারে তেলের ভয়াবহ দরপতন! ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬৩ ডলারে নামলো, যা ২০২১ সালের পর সর্বনিম্ন। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্থরতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা এই পতনের মূল কারণ। এর প্রভাবে ভোক্তা পর্যায়ে খরচ কমলেও, তেল রপ্তানিকারক দেশগুলো পড়তে পারে মারাত্মক সংকটে।


তেলের বাজারে রেকর্ড দরপতন: ২০২১ সালের পর সর্বনিম্ন দামে ব্রেন্ট ও ডব্লিউটিআই

বিশ্বব্যাপী জ্বালানি বাজারে নতুন করে এক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। ২০২১ সালের পর প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য এমন মাত্রায় নেমে এসেছে, যা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। গতকাল সোমবার (৭ এপ্রিল) বিশ্ববাজারে প্রধান তেল সূচক ব্রেন্ট ক্রুড অয়েল ব্যারেলপ্রতি নেমে এসেছে মাত্র ৬৩.৪৯ ডলারে, যা এ সময়ের চেয়ে ৩.২ শতাংশ কম

এই তথ্য নিশ্চিত করেছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। তাদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার মধ্যে এই দামের রেকর্ড করা হয়। এই দাম পতন কেবল ব্রেন্ট ক্রুডে সীমাবদ্ধ নয়। মার্কিন ক্রুড অয়েলের মূল্য সূচক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) -ও একইভাবে রেকর্ড দরপতনের মুখে পড়ে। WTI-এর মূল্য হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৩.৫৮ শতাংশ

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এর পেছনে রয়েছে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দেন, যা বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করে। গত সপ্তাহেও এর ফলে ব্রেন্ট ও WTI-এর দাম যথাক্রমে ১০.৯% এবং ১০.৬% হ্রাস পায়। সেই ধারাবাহিকতা এ সপ্তাহেও বজায় থাকলো।


 কেন ঘটছে এমন পতন?

বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক ধীরগতির কারণে জ্বালানির চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, যুদ্ধাবস্থা, এবং বাজারে ক্রয়ক্ষমতার কমতি মিলিয়ে এই সংকট আরও তীব্র হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক তেল বাজারে ভারসাম্য রক্ষা করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যদিও এই দাম পতনে ভোক্তা পর্যায়ে তেল ও গ্যাসের দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে তেল রপ্তানিনির্ভর দেশগুলোর জন্য এটি এক মারাত্মক সংকেত। তাদের রাজস্ব আয় বড় ধরনের হুমকিতে পড়তে পারে। বিশেষ করে ওপেকভুক্ত দেশগুলো ইতোমধ্যে মূল্য স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে বলে জানা গেছে।


 সামনে কী হতে পারে?

বিশ্বব্যাপী তেলের এই দরপতন আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্যকে আরও নাজুক করে তুলতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার ছায়া যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে তেলের দাম আরও নেমে যেতে পারে। এক্ষেত্রে ওপেক এবং অন্যান্য প্রধান তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও উৎপাদন কৌশল নির্ধারণে বড় প্রভাব ফেলতে পারে ভবিষ্যতের বাজারে।

তবে অনেক অর্থনীতিবিদ আশাবাদী যে, বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া জোরালো হলে আগামী মাসগুলোতে তেলের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে।




Walang nakitang komento


News Card Generator