close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

বিরোধী রাজনীতিতে নতুন মোড়: ড. ইউনূসের দপ্তরে বিএনপি ও জামায়াতকে তলব!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা যখন চরমে, তখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আলোচনার টেবিলে টানলেন বিএনপি ও জামায়াতকে। রাজনৈতিক সমঝোতার বার্তা, না কি নতুন কৌশলের শুরু? ভেতরের খেলার পর্দ..

রাজনীতির উত্তপ্ত আবহে এক যুগান্তকারী সম্ভাবনার ইঙ্গিত মিলল। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামীকাল শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-কে সরাসরি আলোচনায় ডেকেছেন। সূত্র জানিয়েছে, বিএনপিকে এই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার নিজ কার্যালয় থেকে।

শুক্রবার (২৩ মে) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এ তথ্য গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন। তার ভাষায়, “প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আমাদের জানানো হয়েছে যে, অধ্যাপক ইউনূস শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিএনপির সাথে বৈঠক করতে আগ্রহী।”

তবে বিএনপি এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৈঠকে অংশগ্রহণের বিষয়টি তারা শনিবার সিদ্ধান্ত নেবেন।


চেষ্টা ছিল, দৃষ্টি ছিল, বাধাও ছিল!

সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও জানান, বিএনপি দীর্ঘদিন ধরেই সরকারপ্রধানের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করছিল। “গত ১৯ মে থেকে আমরা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্যোগ নিয়েছিলাম, কিন্তু তা সফল হয়নি। মনে হচ্ছে, সরকারের ভেতরে থাকা কিছু আওয়ামী ঘরানার প্রভাবশালী ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী মহল বিএনপিকে এখনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখে। ফলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগে তারা অনীহা দেখিয়েছে।”

এ বক্তব্যে পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত মিলেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরেও রাজনৈতিক বিভাজন ও অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা বিদ্যমান রয়েছে।


জামায়াতকেও ডাক: কৌশল না সমঝোতা?

এদিকে, একই দিনে আরেক চমকপ্রদ ঘোষণা এসেছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ নিশ্চিত করেছেন, তার দলও আগামীকাল শনিবার (২৪ মে) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসবে।

নিজের ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন, “প্রধান উপদেষ্টার সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বৈঠক আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।”

জামায়াতের পক্ষ থেকে এ বক্তব্য একটি রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কেননা, বিএনপি ও জামায়াত — উভয় দলই মাঠের বিরোধী রাজনীতিতে পুরোনো মিত্র, আবার সাম্প্রতিক সময়ে আলাদাভাবে রাজনৈতিক চর্চা চালিয়ে যাচ্ছে।

রাজনীতির সমীকরণ: নতুন ম্যাপ আঁকার সময়?

বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই আলোচনার গুরুত্ব অপরিসীম। দেশে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থাপনা, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে চলমান আন্দোলন, এবং বিরোধী দলের ওপর সরকারের কড়া অবস্থান — সবমিলিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা এক চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এই প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টার আলোচনার ডাক কি কেবলমাত্র রাজনৈতিক শিষ্টাচার? না কি এর মাধ্যমে ড. ইউনূস একটি সমঝোতার রূপরেখা তৈরি করতে চাইছেন?

বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি বিএনপি এবং জামায়াত উভয়ই বৈঠকে অংশ নেয় এবং তা থেকে কোনো গঠনমূলক রূপরেখা উঠে আসে, তাহলে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটানোর একটি পথ তৈরি হতে পারে।


জনমনে প্রশ্ন: আলোচনার ফলাফল কী হবে?

এই বৈঠককে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে যেমন উত্তেজনা বিরাজ করছে, তেমনি সাধারণ মানুষের মধ্যেও কৌতূহল তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি হবে কি না, তা এখন ড. ইউনূসের উদ্যোগের সাফল্যের উপর নির্ভর করছে।


উপসংহার

বাংলাদেশের রাজনীতি যেন এক মোড় ঘোরাতে চলেছে। দীর্ঘদিনের অবরুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে এই আলোচনা যেন এক নতুন ভোরের আশাবাদ তৈরি করেছে।
তবে সেই আশাবাদ কতটা বাস্তব হবে, আর কতটা কৌশলের অংশ — সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Aucun commentaire trouvé