close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

বিমানবন্দরে ছেড়ে দিলে বলতেন, ছেড়ে দিয়েছেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে ঘিরে গ্রেপ্তার এবং বিদেশযাত্রা নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মন্তব্যে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মহল। “বিমানবন্দরে ছেড়ে দিলে বলতেন ছেড়ে দিয়েছেন”—এই বক্ত..

নুসরাত ফারিয়া গ্রেপ্তার: ‘বিমানবন্দরে ছেড়ে দিলে বলতেন ছেড়ে দিয়েছেন’—স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মন্তব্যে তোলপাড়

জুমবাংলা স্পেশাল রিপোর্ট:
জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও মডেল নুসরাত ফারিয়াকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাম্প্রতিক পদক্ষেপ ও সরকারের অবস্থান নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তার গ্রেপ্তার, বিমানবন্দরে আটকের প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর মন্তব্য নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

সোমবার (১৯ মে) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা বলেন,

“নুসরাত ফারিয়ার নামে মামলা থাকলে আপনি কি করবেন? বিমানবন্দরে ছেড়ে দিলে বলতেন, ছেড়ে দিয়েছেন।”

এই বক্তব্যে বোঝা যায়, সরকারের পক্ষ থেকে এমন কোনো পক্ষপাতিত্ব করা হয়নি, বরং যে পলিসি অনুসারে বিমানবন্দরে কাউকে আটক করা হয়, ফারিয়াও সেই নীতির আওতাভুক্ত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন,

“যারা প্রকৃত অপরাধী, শুধু তাদেরই আইনের আওতায় আনা হবে। কোনো নিরীহ ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হবে না—এটাই সরকারের প্রতিশ্রুতি। তবে তদন্ত এখনো শেষ হয়নি, বিচারপ্রক্রিয়া চলমান।”


সংস্কৃতি উপদেষ্টার বিব্রত প্রকাশ

এদিকে, ফারিয়ার গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সারওয়ার ফারুকী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে লিখেছেন,

“নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার আমাদের জন্য বিব্রতকর একটি ঘটনা। ঢালাও মামলার ভিত্তিতে কাউকে আটক করার পরিবর্তে প্রাথমিক তদন্তে সংশ্লিষ্টতা না থাকলে কাউকে গ্রেপ্তার করা উচিত নয়।”

তিনি আরও জানান, সাধারণত তিনি তার মন্ত্রণালয়ের কাজের বাইরে মন্তব্য করেন না, তবে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি একান্তভাবে নিজের মতামত জানিয়েছেন। পোস্টটিতে তার শিল্প-পরিচয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন,

“আমি এই ইন্ডাস্ট্রিরই মানুষ ছিলাম এবং দুইদিন পর সেখানেই ফিরে যাবো।”


বিচারিক প্রক্রিয়া ও কারাগারে প্রেরণ

গতকাল সকালে ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিল্লাল ভূঁইয়া নুসরাত ফারিয়াকে আদালতে হাজির করেন। ভাটারা থানায় দায়ের করা ‘ভৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ সময় এনামুল হক হত্যা চেষ্টা মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

আদালতে হাজিরের পর তদন্ত কর্মকর্তা ফারিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন জানান। অন্যদিকে আসামিপক্ষ তার জামিনের আবেদন করে। রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করা হলে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

তবে আদালত আগামী ২২ মে পরবর্তী জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছেন।


বিদেশযাত্রা নিষেধাজ্ঞা ও সরকারের নীতিমালা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন,

“বিদেশযাত্রা নিষেধাজ্ঞার একটি নির্দিষ্ট পলিসি রয়েছে। কেউ যদি সেই পলিসির আওতায় পড়ে, তবে বিমানবন্দরে তাকে আটকানো হয়। এখানে আলাদা করে কাউকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি।”

তিনি বারবার এ বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্টা করেন যে, এই পুরো প্রক্রিয়ায় কোনো পক্ষপাত কিংবা রাজনৈতিক প্রভাব নেই।


সামাজিক প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ

নুসরাত ফারিয়াকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভক্ত প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন, একজন জনপ্রিয় শিল্পীকে এভাবে আটকের ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, আইনের চোখে সবাই সমান এবং যদি কেউ অপরাধ করে থাকেন, তার বিচার অবশ্যই হওয়া উচিত।

সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেকেই ফারিয়ার পক্ষে সামাজিক মাধ্যমে সরব হয়েছেন। আবার অন্য একটি অংশ চাইছে, আইন ও তদন্তের স্বচ্ছতা যেন নিশ্চিত হয় এবং কেউ যেন অহেতুক হয়রানির শিকার না হন।

Không có bình luận nào được tìm thấy