বিজয় দিবসে নতুন সংকল্প: রাজনীতির জটিলতা কাটিয়ে জাতীয় ঐক্যের পথে বাংলাদেশ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশে আজ কী চাই আমরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক জটিলতা নতুন কিছু নয়। রাজনীতির উন্নতি ও প্রগতির জন্য আদর্শের প্রয়োজনীয়তা চিরন্তন। ইতিহাস সাক্ষী, সর্বজনীন কল্যাণে স
বাংলাদেশে আজ কী চাই আমরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক জটিলতা নতুন কিছু নয়। রাজনীতির উন্নতি ও প্রগতির জন্য আদর্শের প্রয়োজনীয়তা চিরন্তন। ইতিহাস সাক্ষী, সর্বজনীন কল্যাণে সব সময় তরুণরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। বাংলার মাটিতেও সেই ইতিহাসের ব্যতিক্রম ঘটেনি। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের গৌরবময় বিজয় দিবস। দীর্ঘ সংগ্রাম এবং স্বাধীনতাযুদ্ধের পর পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। এই সংগ্রামে সাধারণ মানুষের দৃঢ় সমর্থন এবং ভারতসহ আন্তর্জাতিক শক্তির সহযোগিতা ছিল অনস্বীকার্য। বিশেষ করে ভারত এবং তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। তবে এখন সময় নিজেদের বুদ্ধি, শক্তি ও বাস্তবতা অনুযায়ী এগিয়ে চলার। বাংলাদেশের আজকের প্রশ্ন: অর্জন কী? সমস্যা কোথায়? করণীয় কী? স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশের মানুষ অভাব-অনটন দূর করতে অনেকদূর এগিয়েছে। কিন্তু সামাজিক ও নৈতিক দিক দিয়ে দেশের উন্নতি আশানুরূপ হয়নি। সংঘাত, দুর্নীতি ও স্বার্থান্বেষী রাজনীতির কারণে বাংলাদেশ আজ নানা সমস্যায় জর্জরিত। প্রশাসন ব্যবস্থা দলীয়করণের ফলে দুর্বল হয়েছে, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনোবল ভেঙে পড়েছে। রাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ঋণখেলাপি, দুর্নীতি ও বিদেশে অর্থ পাচারের ঘটনা জনমনে হতাশা সৃষ্টি করেছে। শিক্ষাব্যবস্থা ও সংবিধানও আজ প্রশ্নবিদ্ধ। সর্বত্র সুবিধাবাদ ও ভোগবাদী মানসিকতার বিস্তার ঘটেছে। বিশ্বপরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ভূমিকা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক রাখা জরুরি। তবে এই ভারসাম্যহীনতা মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা মাথায় রেখে কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। বর্তমান বিশ্বে একটি পক্ষ হলো যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো; আরেক পক্ষ রাশিয়া ও চীন। বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ মূলত মার্কিন নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক সংস্থা। তাই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় একটি বৃহৎ জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংকট: নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি বাংলাদেশের মানুষ একটি গ্রহণযোগ্য এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংকট কাটিয়ে এমন একটি রাজনৈতিক ধারার সূচনা করা দরকার, যা জনগণের কল্যাণে কাজ করবে। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগণের আস্থাহীনতা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। এর ফলে নির্দলীয় এবং নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দ্বারা রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের চাহিদা জোরালো হচ্ছে। তবে দ্রুত একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের দাবিও অগ্রাহ্য করা যাবে না। রাজনীতির ভবিষ্যৎ: নতুন প্রজন্মের ভূমিকা রাজনীতির গতি নির্ধারণে তরুণদের ভূমিকা অপরিসীম। প্রবীণদের প্রগতিবিমুখ চিন্তার গঠনমূলক সমালোচনা করে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। সর্বজনীন কল্যাণের আদর্শ নিয়ে নতুন রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। প্রযুক্তির সুবিধা কাজে লাগিয়ে দেশের জনশক্তি এবং প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বিজয় দিবসে নতুন সংকল্প বিজয় দিবসের মতো গৌরবময় দিনে প্রয়োজন নতুন চিন্তার, নতুন কর্মের সংকল্প। সত্য ও ন্যায়ের জয় নিশ্চিত করতে হবে। অসত্য ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে হবে। জনশক্তি, চিন্তা ও প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ব্যবহার এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি কল্যাণকর, উন্নতিশীল রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলাই হবে আজকের প্রজন্মের প্রধান দায়িত্ব। চূড়ান্ত বার্তা: আজ প্রয়োজন জাতীয় ঐক্যের, সময়োপযোগী রাজনীতির এবং তরুণদের অগ্রণী ভূমিকার। বিজয় দিবসে এই সংকল্প হোক নতুন ভবিষ্যতের দিশারী।
Keine Kommentare gefunden