close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

বিএনপিতে আশ্রয় পাচ্ছে জুলাই বিপ্লবে হা মলা কারীরা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রাজশাহীতে জুলাই বিপ্লবের ভয়াবহ হামলার অভিযুক্তদের বিএনপিতে পুনর্বাসনের বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন দলটির সাবেক নেতারা। ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে আওয়ামীপন্থীদের নেতৃত্বে আনা হচ্ছে বলে দাবি।..

জুলাই বিপ্লবের খুনিদের ঠাঁই রাজশাহী বিএনপিতে? বিস্ফোরক অভিযোগ দলীয় সাবেক নেতাদের

রাজশাহীতে জুলাই বিপ্লবের সময় ছাত্র-জনতার ওপর চালানো ভয়াবহ হামলার সঙ্গে যুক্ত খুনি ও নির্যাতনকারীরা বর্তমানে রাজশাহী মহানগর বিএনপির বিভিন্ন পদে জায়গা করে নিচ্ছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন দলের সাবেক কয়েকজন নেতা।

রবিবার (১১ মে) দুপুরে নগরীর এক সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইটসহ আরও কয়েকজন নেতা।

‘জুলাই হামলাকারীদের পুনর্বাসন করছে বিএনপি নেতারা’

সাইদুর রহমান পিন্টু অভিযোগ করেন, রাজশাহী বিএনপির নেতৃত্বে থাকা কিছু ব্যক্তি আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর (যেমন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ) বিতর্কিত ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত সাবেক নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য পরিচিত এবং জুলাই বিপ্লবে হামলার সরাসরি নেতৃত্বদানকারী।

তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বারবার সতর্ক করেছেন যাতে দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে কেউ বেআইনি কর্মকাণ্ডে না জড়ায়। কিন্তু রাজশাহী মহানগর বিএনপির একাংশ তার নির্দেশনা উপেক্ষা করে ব্যক্তিস্বার্থে অপকর্মে লিপ্ত।

ত্যাগীদের বাদ দিয়ে ‘পকেট কমিটি’ গঠন?

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজশাহীর মতো আন্দোলনপ্রবণ এলাকায় বহুদিনের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে গঠন করা হচ্ছে কথিত ‘পকেট কমিটি’। এতে মূল বিএনপি নেতাদের হটিয়ে ‘হাইব্রিড’ নেতাদের জায়গা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।

পিন্টু বলেন, “আজ যারা বিএনপির রাজপাড়া থানা বা মহানগর কমিটির দায়িত্বে, তাদের অনেকেই একসময় আওয়ামী লীগ, জাসদ বা জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তারা এখন ব্যক্তিগত স্বার্থে সুবিধাবাদী লোকদের এনে দলে ভিড়াচ্ছেন।”

নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

অভিযোগে বলা হয়, রাজপাড়া থানা বিএনপির বর্তমান সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন আহমেদ, মাহমুদুল হক রুবেল, হারুনুর রশিদ (সাবেক জাসদ নেতা), আব্দুর রাজ্জাক (সাবেক জাতীয় পার্টির নেতা), বদরুদ্দোজা বদর প্রমুখ পূর্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং বর্তমানে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন।

বিশেষভাবে আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট রাজশাহীতে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা রনির ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। এছাড়া রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগপন্থী প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করেছেন বলেও দাবি করা হয়।

মহানগর আহ্বায়ক এরশাদ আলীর প্রতিক্রিয়া

এই অভিযোগের জবাবে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা বলেন, “যারা এসব বলছে তারা দলে কোনো পদে নেই। তাদের কথা আমলে নেওয়ার কিছু নেই। আমি নিজেই আন্দোলনের মাঠে ছিলাম সব সময়, আমাকে কেন্দ্র থেকে আহ্বায়ক করা হয়েছে।”

তিনি আরও দাবি করেন, “আমরা ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করছি। ব্যক্তিস্বার্থে নয়, দলীয় ঐক্যের ভিত্তিতে কমিটি গঠন করা হয়েছে।”


 

রাজশাহী বিএনপির অভ্যন্তরে এই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের ঘটনা দলটির আভ্যন্তরীণ কোন্দল ও নেতৃত্বের সংকটকে আরও প্রকট করে তুলেছে। ত্যাগী কর্মীদের বাদ দিয়ে সুবিধাবাদীদের পুনর্বাসনের অভিযোগে রাজশাহীর রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। জুলাই বিপ্লবের মতো স্পর্শকাতর ঘটনার অভিযুক্তদের আশ্রয়ের অভিযোগ বিএনপির ভাবমূর্তিতেও প্রভাব ফেলতে পারে—বিশেষ করে যখন জাতীয় রাজনীতি নির্বাচনপূর্ব টানাপেড়েনে উত্তপ্ত।

No comments found